Sunday, October 4, 2020

:: প্লেজারিজম এবং ফিডম ফাইটারস এর এস নিয়ে টানাটানি ::

 মানুষজন প্লেজারিজম নিয়ে কথা বলছে ফেসবুকে। ভালো লাগছে যে এতে যদি কারো কারো সেলফ - এস্টীম জন্মায়। চাকরির শুরুতে সব কাজ করার পরে যখন দেখতাম আরেকজন হাসিমুখে স্বাক্ষর করছে তখন একেবারেই মাননীয় স্পীকার হইয়া যাইতাম... আরো বড় স্পীকার হইয়া গেছিলাম যখন দুই বিজ্ঞজন একদিন ফ্রিডম ফাইটারস এর এস ধইরা টান দিয়া আমাকে কথা শুনাইয়া ঐ আরেকজনরে কইলো যে কি মিয়া তুমি এদের সুপারভাইজ করোনা?!! আমি রুম থেকে বের হয়ে অনেক হেসেছিলাম - তবে তা রাগে [ও হ্যাঁ, রাগে হাসতে পারা কঠিন, কিন্তু কাজে দেয় হেভভি]!

ব্যাপারটা ছিলো এইরকম - স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ছেলেমেয়েরা অনুষ্টান করবে এবং সেখানে দুজন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে আসবে তাদের কথা শোনার জন্য। একেবারেই 'সময় নাই গময় নাই, বাবু একখান টিকেট' টাইপের আবদার নিয়ে এসেছিলো পোলাপাইন যে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে তারা কনসার্টসহ বিশাল একখান অনুষ্টান করবে মুক্তমঞ্চে। এজন্য তারা আবার স্পন্সরও জোগাড়ের চেষ্টা করবে। বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছেলেমেয়েদের কোন আবদারই তেমন একটা ফেলিনি, এইটাও ফেললাম না। আর এদের উৎসাহও ছিলো দেখার মতো। তবে সবার যে ছিলো তা কিন্তু না ... এই যেমন আমি পোলাপাইনের সাথে মুক্তমঞ্চে যখন কার্পেট ফেলছিলাম তখন এদেরই কেউ কেউ আবার মঞ্চের একটু দুরে দাড়িয়ে তামাশা দেখছিলো বা সিগারেট ফুকছিলো!
অনুষদের বিজ্ঞ ও তাদের শিষ্যরাও এই পোলাপাইনের মতো তামাশা দেখছিলো এবং যতভাবে পারে এটা বন্ধ করার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু উনাদের জন্য মুশকিল হয়ে গেছিলো ব্যাপারটা মূলত তৎকালীন উপাচার্যের কারনে। আমরা উপাচার্যের কাছে গিয়ে বললে উনি সাথে সাথে অনুমতি দিয়ে বললেন যে আমি নিজেও থাকবো। এটা খুবই একটা ভালো উদ্যোগ ছিলো এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেছি যে তরুন প্রজন্ম মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনতে চায় এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না। আমার ধারনা উপাচার্য মহোদয়ও একই কারনে সাথে সাথেই অনুমতি দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু অনুষদের বিজ্ঞরা তা মানবেন কেন যেখানে আবার উনাদের আঙুল ঢুকানোর যায়গা নাই। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞজনরা আমাকে ডাকলেন। হালকা বকাঝকা করলেন যে কেন এসব ঝামেলায় যাচ্ছি। আমি ঐটুকুকে আশীর্বাদ হিসেবে নিয়ে জানালাম যে ছেলেমেয়েগুলো রাত বিরাতে ধুমাইয়া কাজ করছে। তখনো তো এতো কিছু জানতাম না যে উপাচার্য অনুমতি দিলে আর কিছু লাগেনা... উনাদের বকাঝকার আশীর্বাদের পরে এলো আসল কাহিনী ... ছেলেমেয়েরা নিজেদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শেখ মুজিব হত্যা মামলার বাদীকে প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন। উনি বলেছেন যে উনাকে নিরাপত্তা দিতে পারলে উনি আসবেন। মজার কথা হলো উপাচার্য সেই নিরাপত্তা দিতে রাজী হয়েছেন। তো আমরা উনাকে সহ দুজন মুক্তিযোদ্ধার কথা শুনবো প্ল্যান নিয়েই কাজ করছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞজনদের তীব্র বাধা পেলাম বাদীর ব্যাপারে। বাধ্য হয়ে উনাকে বাদ দিলাম। কথা হলো দুজন সাধারন মুক্তিযোদ্ধা আসবেন তাহলে। এর পরে আবার সমস্যা যে মুক্তিযোদ্ধাদের এতো কথা শোনার সময় কই, একজন করে দাও। আবারো মেনে নিলাম - একজন করে নিলাম।
এখন এই একজন তো নতুন কাহিনী। স্পন্সরদের কাছে যেসব চিঠি লিখেছিলাম সব জায়গায় দুজনের কথা বলা ছিলো এবং লেখা ছিলো freedom fighters. পরে যখন একজন হয়ে গেলো চিঠি তাড়াহুড়ো করে এডিট করতে গিয়ে fighters এর S টা আর কাটা কয়নি। আমাদের বিজ্ঞজনরা তন্ন তন্ন কইরা আর কোন ভুল খুইজা না পাইয়া এই এস নিয়া আমারে এক ধাপ কইলেন... হেভভি প্রেস্টিজে লেগেছিলো, কিন্তু পোলাপাইনের দিকে তাকিয়ে কিছু কই নাই।
সেই অনুষ্টানটা শেষ পর্যন্ত হয়েছিলো। মাত্র ৮৯ দিন বয়সী একটা বিভাগ মুক্তমঞ্চে একক অনুষ্টান করেছে যাদের কারো কোন ধরনের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলোনা। জাবিতে এতো কম বয়সী কোন বিভাগ এর আগে এমনটা করেছে আমি শুনিনি। কপাল ভালো যে তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিগলির টোকাই মার্কা রাজনীতি সম্পর্কে জানতাম না। তাহলে হয়তো ভয়েই রাজী হইতে পারতাম না পোলাপাইনের কথায়!!

Saturday, September 26, 2020

অসহনীয় সংকেত

 এই যে আমি যা ইচ্ছা তা ই করতে পারি জাতীয় সংকেতগুলো ভালো না। এগুলো ইতিহাসের মধ্যে নতুন ইতিহাস তৈরি করে এবং কাউকে কাউকে একেবারেই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়। বাংলাদেশে ইতিহাসকে লালন করা পরিবারগুলো যদি ইতিহাসের শিক্ষাকে ধারণ না করে এটা তাদের এক ধরনের ব্যর্থতা। দুঃখজনক হলো এরজন্য দেশকে অনেক মূল্য দিতে হয়।

- একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার কে ভারপ্রাপ্ত ভিসি করে কি সংকেত দেয়া হচ্ছে? কাকে দেয়া হচ্ছে এই সংকেত? কারা লাভবান হবে এতে? একটা দেশের শিক্ষাখাত যেখানে এখনো নকলের মহামারি কাটিয়ে নিজেকে দাড় করাতে পারেনি, সেখানে এই খাতটি নিয়ে এসব তামাশা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই যে আমি কাউকেই পাত্তা দেইনা, বা আমার ইতিহাসই সব, অন্য সকল ইতিহাস বা আবেগ তিস্তার পানির মতো যে থাকলে থাকলো না থাকলে নাই - এই মনোভাব একেবারেই ভালো না।

- দিনে দুপুরে খুন ধর্ষন হচ্ছে, দলীয় ছেলেরা করছে, কিন্তু বিচার হচ্ছেনা। এমসি কলেজ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বর্বর রা বর্বর ই থাকে, করোনাও এদের পরিবর্তন করতে পারেনা। কিন্তু এদের মতো বর্বররা বেঁচে যায়/যাবে দলীয় পরিচয় থাকার কারনে। সব সরকারের আমলেই তা হচ্ছে।

- ভারতকে সব খুলে দিয়ে কি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে? দেশের বারোটা বাজতে কি খুব বেশি বাকি আছে? আমার অবস্থান স্পষ্ট এখানে - কেউ যদি বাংলাদেশকে ভারতের আরেকটা রাজ্য বানাতে চায় সেটা স্পষ্টই বলা উচিৎ। অন্যথায় বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশের মতোই থাকতে দেয়া উচিৎ। বাংলাদেশের আচরণ একটা স্বাধীন দেশের মতো হওয়া উচিৎ। অবস্থান পরিষ্কার হলে দেশের মানুষের উপড় দায়িত্ব বর্তাবে তারা কি চায়, তখন মানুষই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। ৭১ এর শিক্ষা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে কেন? মুখে ৭১ এর ফেনা তুলে মনে মনে আইয়ুব ইয়াহিয়া পালন করলে তো হবেনা।

- শিক্ষকসহ অনেকে একটা দেশের এই মৃত্যুযাত্রায় বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন। অন্যদের নিয়ে কিছু না বললেও শিক্ষকদের দেখে আমার আফসোস হয়। আবার হয় ও না। এদের শিক্ষক হওয়াও এই মরন নাটকের নাট্যকারদের করুনা, তাই শবযাত্রায় এরা শামিল হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি শুধু ভাবছি জার্মানির ১৯৪৫ সাল ও একইরকম ছিলো বোধকরি!!

এই কথাগুলো আমার প্রজন্ম যত সরকার দেখেছে সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শুধু অত্যাচার আর অনিয়মের তীব্রতা বেড়েছে দিনকে দিন। আমরা এখন অনেক ক্লান্ত এসব নিয়ে, এসব থেকে পরিত্রাণ চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অপমান

 [একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গ]

অবাক অনেকে হচ্ছে, আমি বাংলাদেশের শিক্ষাখাতের অসভ্যতামি নিয়ে অবাক হওয়া অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। এরপরেও এখানে একটু অবাক হলাম। এরকম একটা ঘটনা কি করে ঘটে? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ফাইলে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে এই ফাইলে অনেক দপ্তর ঘুরে - শিক্ষা, প্রধানমন্ত্রী ইত্যাদি... কারোরই এই অসঙ্গতিটা চোখে পড়লোনা? দুটো ব্যাপার হতে পারে ... প্রশাসনে যারা কাজ করেন তারা একেবারেই অথর্ব অথবা পা থেকে মাথা পর্যন্ত মরিচা পরে গেছে!
বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন আঙ্গিকে মেশা বা কাজ করার সূত্রে বুঝতে পেরেছি সরকারি চাকুরেরা বিশেষ করে বিসিএসের মাধ্যমে যারা সরকারি চাকরিতে ঢুকেন তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের খুব একটা পছন্দ করেন না। এদের শিক্ষার প্রতি বিশাল ক্ষোভ, এবং কারো কারো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে না পারার ক্ষোভ! ইনারা ইনাদের কাজে কর্মে যতভাবে সম্ভব এই শিক্ষকদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে হেনস্থা করতে এক পা ও পিছু যান না... কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ গিনিস বুকে নাম লিখানোর মতো একটা কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা কমিটি করেছে যেখানে একজন শিক্ষক ও ছিলেন না। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী কারোরই কোন সমস্যা দেখা যায়নি এইরকম একটা অস্বাভাবিক ব্যাপারে।
আরো কিছু গ্রুপ নিজের স্বার্থে বা হীনমন্যতায় সাগ্রহে যোগ দেন এই ঘৃণার উৎসবে। তারা কারা?
- সদ্য পাশ করে বের হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটরা। এরা বাইরে গিয়ে এক খান ১০হাজার টাকা বেতনের চাকরি জুটাইয়া নিজের থেকে ২ বছরের সিনিয়রকে বস হিসেবে পেয়ে স্যার বলতে বলতে মুখের ফেনা বের করেন, কিন্তু সুযোগ পেলেই নিজের শিক্ষকদের ধুমাইয়া গালি দেন। নিজের স্যারদের নামের পরে স্যার যুক্ত করতে ভীষণ লজ্জা পান, পাছে কেউ আবার ইনাদের ব্যাকডেটেড ভাবে। যেসব গ্রাম থেকে আসা ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো জামাকাপড় পড়া শিখাইছি তারা এখন মূল্যায়ন করে আমাদের ... তাদের থেকে কতো টাকা কম বেতন পাই, তাদের থেকে কতোটা কম আরামের জীবনযাপন করি, আমাদের উপরি কামাই আছে কিনা বা কত এইসব দিয়ে... ব্যর্থতা আমাদের, শিক্ষা দিতে পারিনি!
- পুলিশ ও আর্মিঃ এই দুইটা গ্রুপই একধরনের মানুষ পিটানোর বিকৃত প্রশিক্ষন নিয়ে জীবনযাপন করে। নিজেরা স্বাধীন দেশে পরাধীনের মতো থাকে, কারন দুই চারজন হোমরা চোমড়া ইনাদের চালান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানুষজন এহেন স্বাধীনতা ভোগ করবে, এই ব্যাপারটা উনারা ঠিক হজম করতে পারেন না। একবার শুধু জেনে দেখবেন পুলিশ বা আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পিটিয়ে কি মজা পায়!!
- আমাদের সবার প্রিয় রাজনীতিবিদরাঃ ইনাদের সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলবো যে বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লে ওখানকার পরিবেশ বা শিক্ষা সম্পর্কে কারোরই সম্যক বা সঠিক জ্ঞান থাকার কথা না। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক হলো, উনারা যেটা জানেন না সেটা জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যান না, যান ঐ যে সেসব মানুষদের কাছে যারা অলরেডি শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘৃনা করে...

ঈমান ও আমল

 - বন্ধু হতে হয় আবু বকর (রাঃ) এর মতো যে কিনা এক বাক্যে বলে দেয় যে উনি [নবী]যদি এটা বলে থাকেন তাহলে তা অবশ্যই ঘটেছে [ঘটনা শবে মেরাজ]। ভিতরটা পরিষ্কার থাকা চাই সবার আগে...নইলে কিছুই হয় না কাকা!

- বিশ্বাস এবং লয়্যালটিও আবু বকরের মতই হওয়া চাই। নবী/রাসুল রা কোন সম্পত্তি উত্তরাধিকারস্বরূপ রেখে যান না এই হাদিসকে মেনে এবং হাদিসের পবিত্রতা রক্ষা করে উনি নিজের মেয়ে [নবীজীর স্ত্রী] ও নবীর মেয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নবীর মেয়ে যার সম্মান কিনা অনেক উঁচুতে তিনি এই ঘটনার কারনে আবু বকরের সাথে ৬ মাস ধরে কথা বলেন নি, কিন্তু আবু বকর হাদিসের বিপরীতে যান নি। এইপারের চেয়ে ঐপার বড় রে পাগলা!
- শাসক দরকার ওমর (রাঃ) এর মত যে কিনা ইসলামের রাফ বয় হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবাই তাকে ভয় পেত, এবং নবীজী এমনও বলেছেন যে ওমর এর পথ শয়তান ও মাড়ায় না। সেই ওমর দয়ার সাগর হয়ে গেছেন খলিফা হবার পরে। যে কেউ [মহিলাসহ] যেকোন সময় [এমনকি খুতবা দেয়ার সময়েও) উনাকে চ্যালেঞ্জ বা বিরোধিতা করতে পারতো। শাসক হিসেবে ওমর নিজের দায়বদ্ধতা মেনে নিয়ে সব শুনতেন, ভুল হলে ভরা মজলিসে তা মেনে নিতেন, সমস্যা থাকলে প্রতিকার করতেন...কাকা, ক্ষমতা পাইয়া চিন্তা কইরা দেখা খুব জরুরী এই ক্ষমতায়নের জবাবদিহি কিভাবে করবেন। ক্ষমতা কিন্তু অনেক ধরনের - এই যে আপনার এক ফোটা বেশি জ্ঞান আছে, এইটাও একটা ক্ষমতা। হিসাব রাইখেন দাদা হিসাব দেবার জন্য...

Friday, July 24, 2020

দুল হিজ্জাহ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত

২২ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে আরবি বছরের শেষ মাস, দুল হিজ্জাহ। চাঁদ দেখার বৈষম্য অনুযায়ী এই মাস একেক দেশে হয়তো একেক দিন শুরু হচ্ছে। এই শুরুটা গুরুত্বপূর্ন এই কারনে যে এই মাসের ১০ তারিখে ঈদ উল আযহা। তাই সবাই শুরু নিয়ে সতর্ক থাকে, চাঁদ দেখে নিশ্চিত হতে চায়। এই মাসে হজ্ব হবার কারনে এই মাসকে হজ্বের মাস ও বলা হয়ে থাকে। হজ্ব ও কোরবানি মিলিয়ে এই মাস ইতিমধ্যে অনেক গুরুত্ব বহন করছে।


কিন্তু এটার অন্য গুরুত্ব ও আছে...
- ইসলামিক রীতি অনুযায়ী এই মাসের প্রথম ১০ দিন পুরো বছরের শ্রেষ্ট দিনসমুহ। তাই এই দিনগুলোতে যতবেশি ইবাদত করা যায় তা করার জন্য জোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ৯ তারিখটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ৯ তারিখ আরাফাহ এর দিন। হাজীরা এই দিন আরাফার ময়দানে সমবেত হন।
- ৯ তারিখে রোজা রাখার জন্য বলা হয়েছে শক্তভাবে। ১-৯ তারিখ পর্যন্ত অনেকে রোজা রাখে এবং সেটাকে বিশেষভাবেই উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু একেবারে না পারলে অনেক ইবাদত এবং ৯ তারিখে রোজা রাখার জন্য জোরালো পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এগুলোর কোনটাই বাধ্যতামূলক না, তবে অনেক ফজিলত থাকাতে বার বার বলা হয়েছে।
- ৯ তারিখের রোজার ফজিলত কি? বোখারি এবং তিরমিধী বাদে বাকি সকল সূত্রে বলা হয়েছে যে এই রোজা দুই বছরের (গতবছর + পরেরবছর) গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়। আমি কিছুটা পড়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তেমন কুল কিনারা করতে পারিনি। এতোটুকু বুজেছি এই রোজা অত্যন্ত ফজিলতের, কিন্তু দুই বছর নিয়ে নিশ্চিত করতে বলতে পারছিনা। সামর্থ্য থাকলে কারোরই এই রোজা মিস করা উচিৎ না।


এইরকম আরেকটি রোজা আছে, আশুরার দিন। মুহাররম মাসের ১০ তারিখে। এই রোজারও অত্যত্ন ফজিলত। অনেক সূত্রে এসেছে এটা এক বছরের (আগের বছরের) গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়। আবারো আমি নিশ্চিত করছিনা, তবে এতোটুকু বলতে পারি এই রোজাটিও অনেক সওয়াবের। তাই রাখা উচিৎ। এর সাথে শিয়াদের কোন ইস্যুর কোন সম্পর্ক নাই, এই দিনে মুসা আঃ ফেরাউনের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন।


যদি বছরের হিসাব ধরে নেই, তাহলে এই দুই রোজা তিন বছরের গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়। কিভাবে?
- ধরুন, আপনি আরাফাহ এর দিনে রোজা রাখলেন ২০২০ সালে। তাহলে গুনাহ মাফ হচ্ছে ২০১৯ ও ২০২১ সালের।
- দুল হিজ্জাহ মাসের পরের মাসই মুহাররম মাস। এটা আরবি বছরের প্রথম মাস, তার মানে বছর বদলে গেছে। এই মাসের ১০ তারিখে আশুরার রোজা রাখলে গত বছর মানে ২০২০ সালের গুনাহ মাফ হবার কথা।
- তাহলে দুই রোজা মিলে ২০১৯, ২০২০, ২০২১ সালসমূহের গুনাহ মাফ হবার কথা।
- আবারো বলে নিচ্ছি, কিছু কিছু সূত্রে এসেছে এই হিসাব, কিন্তু বোখারীতে আসেনি।


পড়ে কি মনে হচ্ছে হাদিস জটিল ব্যাপার? আসলে জটিলতা এসেছে আমরা প্রায় ১৫০০ বছর পরে পড়ছি বলে। আমাদের নিশ্চিত হতে হয় যে হাদিসের সূত্র সঠিক আছে কিনা। কিন্তু হাদিস নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা না থাকলে এই সূত্র বুঝা মুশকিল, আর সেখানেই হাদিস কঠিন হয়ে দাড়ায় আমাদের জন্য। যারা নবীজীর মুখে এসব শুনেছেন তাদের কাছে নিশ্চয়ই কঠিন মনে হয়নি।


আমি কেন এখন লিখলাম? ঐ যে এই সময় বেশী বেশি করা পুণ্য কামাইতে বলা হয়েছে – তাই করার চেষ্টা করছি। আপনিও চেষ্টা করুন।


ওহ, আচ্ছা, প্রশ্ন আসতে পারে, আরবি মাস নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে কেন? কারন, নবীজী আরবি মাসের পালাক্রম ঠিক করে দেয়ার পরে বলেছিলেন যে এই ক্রম অনুসারেই সময় ছিলো যখন আল্লাহ স্বর্গ এবং দুনিয়া সৃষ্টি করেছিলেন। মানে হলো এই পালাক্রম হচ্ছে একেবারে অরিজিনাল। [সহি হাদিস, বোখারী থেকে]। এখানে পালাক্রম বলতে ১২ মাসের বছরকে বুঝানো হয়েছে। এবং বলা হয়েছে ৪ টা মাস পবিত্র যাদের মধ্যে তিনটা পরপর আসে – দুল কাদাহ, দুল হিজ্জাহ, মুহাররম। অন্য মাসটি হলো রজব।

Friday, May 29, 2020

ঈদ ই মিলাদুন্নবী

আমাদের দেশের মানুষজন এতোই সহজ সরল যে একটা বাকা জিনিস ও যখন আমাদের জীবনে ছড়িয়ে দেয়া হয়, আমরা তাও সহজ সরলভাবে গ্রহন করে নেই। তেমনিভাবেই আমরা কোন এককালে ঈদ এ মিলাদুন্নবী নামক এক জিনিসকে আপন করে নিয়েছি - নবীজীর জন্মদিন পালন করি আমরা সেদিন।
এই বিষয়ে কয়েকটা কথা ...

১। নবীজী কতো তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন তার সহি কোন ধরনের কোন তথ্য নাই। কয়েকটা তারিখ এসেছে একেবারে প্রথমদিকের বর্ননায়। ইসলামের পণ্ডিতগণ এগুলোর কোনটাকেই সঠিক ধরে নিতে পারেন নি কারন প্রতিটা তারিখের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি আছে।


২। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথমদিককার বর্ননায় ১২ ই রবিউল আউয়াল তেমন জোরালোভাবে আসেনি। বরং অন্য একটা দিন আরো জোরালোভাবে এসেছে। তাই আমরা যে ১২ তারিখে জন্মদিন পালন করি, এটার আসলে তেমন ভিত্তি নাই।


৩। একবার কি ভেবে দেখা উচিৎ না, যদি জন্মদিন পালনের দরকার থাকতো, তাহলে উনার জন্মদিনটা সংরক্ষণ কি করা হতোনা? কোরআনের মতো এমন মহান কাজকে সংরক্ষণ করা গেছে, কিন্তু জন্মদিন করা হয়নি। এটা কি কোন দিক নির্দেশনা দেয় না?


৪। নবীজী প্রতি সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। উনাকে জিজ্ঞেস করা হলে উনি বলেছিলেন যে এই দুইদিন আল্লাহকে বান্দার হিসাব দেখানো হয়। আমি চাই আল্লাহ তখনি আমার হিসাব দেখুন যখন আমি রোজা আছি। সোমবার সম্পর্কে আরো বলেছেন উনি যে আমি সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছি এবং আমার কাছে ওহী আসা শুরু হয়েছে সোমবারে।


এগুলো থেকে শিক্ষা নিলে বুঝা যাবে জন্মবর্ষ পালনের জন্য তেমন উৎসাহ দেয়া হয় নাই। বরং জন্মের দিনটাকে মহিমান্বিত করে দেয়া হয়েছে যাতে মানবজাতির কল্যাণ হয়। এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি করবেন। আপনার কৃতকর্মের হিসাব শুধু আপনাকেই দিতে হবে। আর রোজা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিবো।

Monday, May 25, 2020

মুজিব হত্যার আসামি


অসমর্থিত সূত্রমতে ফেসবুকে দেখতে পাচ্ছি মুজিব হত্যামামলার আরেকজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে ভারতে। দয়া করে এই লোককে কথা বলতে দেয়া হোক এবং আমাদেরও শুনতে দেয়া হোক এদের বক্তব্য কি। যদি ঘটনা সত্যি হয়, ভারত নিয়ে আমার হতাশাটা আরো একধাপ বেড়ে যাবে। ক্যামনে কি?

 আজ ইতিহাসের ছাত্র হয়েছিলাম কিছুক্ষণের জন্য। পর্যবেক্ষন ...

- আমি ভেবেছিলাম স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি (২১ আগস্টে বেঁচে গেছেন বলে)। কিন্তু আজ মনে হলো খন্দকার মোস্তাক আরো বেশি লাকি। এর তো কোন শাস্তিই হয়নি একটা পুরো দেশকে কক্ষচ্যুত করে দেয়ার জন্য। যেখানে মীরজাফরের বংশধরেরা এখনো কোন এলাকার স্থায়ীভাবে থাকতে পারেনা, মোস্তাকের ছেলে আমেরিকায় আর মেয়েরা লন্ডনে... কি আরাম!!
- মুজিব পরবর্তী সময়ে নাকি দেশে খুব আইন শৃংখলা চলে এসেছিলো। শুনেছিলাম। কিন্তু মুজিবের খুনিরা যেভাবে টিভি সাক্ষাৎকারে বা জনসভায় গর্বভরে বলছে তারাই উনাকে খুন করেছে... ব্যাপারটা ভুতের মুখে রাম নাম মনে হলো।

এই নিয়েই প্রশ্ন ...

- জিয়াউর রহমান কেন মুজিবের খুনিদের এতো জামাই আদর করেছিলেন? অন্যরা তো আছেই, এই যে সদ্য প্রয়াত মাজেদের জন্য ও উনার মেলা স্নেহ ছিলো দেখলাম।

উত্তর জানার ইচ্ছা আছে। তবে গালাগালি বা রাজনৈতিক অন্ধ সমর্থন থাকলে দুরে থাকবেন প্লীজ।

গণতন্ত্র


- একজন রাষ্ট্রপতিও আরেকজন মানুষ, কিন্তু গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় আমরা উনাকে প্রথম ব্যক্তি করে নেই। তাই উনারও দায়িত্ব থাকে উনার কাজ গুলো যেন এক নম্বর হয়। তাই রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দিয়েছেন এমন কেউ যখন আবারো খুনের কারনে গ্রেপ্তার হয় তাতে আমি খুবই লজ্জিতবোধ করি। আমি এখানে খুনের দায় রাষ্ট্রপতির উপড় চাপাচ্ছিনা, আমাদের বর্তমান রাষ্ট্রপতি এইদিক দিয়ে অনেক ক্লিন মানুষ। তবে ঐ ব্যক্তি ক্ষমার যোগ্য ছিলো কিনা তা বিশদভাবে দেখা হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি বিনীতভাবে।

- পুলিশ, ডিসি, এবং আরো অনেকে ধান কাটছেন। ভালো কথা। এটার ভালোদিক আছে যদি এটা অন্যদের উৎসাহিত করতে পারে। কিন্তু মন্দদিক হলো, আপাতত এটাকে পুরাই নখরামি মনে হচ্ছে। উনাদের কাজ এটা না। উনাদের কাজ হলো এই কাজটা যাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় তার ব্যবস্থা করা। তাই আমার বিবেচনার উনার আসলে উনাদের সঠিক কাজটি করছেন না।

- ইনারা ধান কাটতে পারেন, তবে সেটা যদি ডিসি হিসেবে প্রটোকল নিয়ে না গিয়ে সাধারন মানুষ হিসেবে করতেন, আরো বেশি ভালো লাগতো। সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে গিয়ে করোনার সময়ে দূরত্ব না মেনে সমাজকে যে ভুল মেসেজ দিচ্ছেন সেটার দায় কে নিবে? নাকি শুধু এইসব হুজুরেরা করলেই সমস্যা? অতঃপর প্রশ্ন জাগবে এইসব শিক্ষিত লোকগুলো কবে পড়ালেখা শুরু করবে মানুষ হবার জন্য?

বিজ্ঞান ও ধর্ম

ধরুন, আপনি অনেক বিজ্ঞান মনষ্ক। তাই বিজ্ঞান নিয়ে আপনার চিন্তাভাবনা অন্যদের থেকে অনেক আলাদা। এতে প্রায়শই আপনি ভেবে বসেন বাকি যারা আপনার মতের সাথে মিল রাখেন না তারা হয়তো বিজ্ঞান বিমুখ। কিন্তু এমনটা নাও হতে পারে। আপনি কি ভেবে দেখেছেন - বিজ্ঞান আসলে দুটো প্রশ্নের উত্তর দেয় বা খোঁজেঃ কি এবং কিভাবে। বিজ্ঞান 'কেন' প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না পুরোপুরি। যেমন ধরুন, বিজ্ঞান আপনাকে বলে দিবে আপনার ছেলে হয়েছে, এবং সেটা কিভাবে হয়েছে। কিন্তু ছেলে কেন হলো তার উত্তর দিতে পারেনা সঠিকভাবে। এই তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর তাহলে অন্যকেউ নিয়ন্ত্রণ করেন - যিনি বাকি দুটো প্রশ্ন তৈরি করেছেন এবং বিজ্ঞানকে সেগুলোর উত্তর দেয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন

:: প্লেজারিজম এবং ফিডম ফাইটারস এর এস নিয়ে টানাটানি ::

 মানুষজন প্লেজারিজম নিয়ে কথা বলছে ফেসবুকে। ভালো লাগছে যে এতে যদি কারো কারো সেলফ - এস্টীম জন্মায়। চাকরির শুরুতে সব কাজ করার পরে যখন দেখতাম আর...