Saturday, October 29, 2016

বিসিএস, পাল, এবং সমসাময়িক

আমি বিসিএস এ কোনদিন চেষ্টা করিনি, তাই এটা নিয়ে তেমন ভাল জানিনা। তবে ইদানিংকালে বিসিএসে প্রথম হওয়া এক পাল কে নিয়ে সেইরকম তামাশা চলছে। চলুন কিছু পালীয় বাৎচিত করি 
  • পাল যা লিখেছেন তা কোন সুস্থ্য মানুষের লিখার কথা না যদি না সে অসুস্থ্য হয়। এই অসুস্থ্যতা মানসিক হতে পারে, প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে, প্রতিহিংসামূলক হতে পারে, হতে পারে অন্য কিছু। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি নিশ্চিত ঢাবিতে এমনটা হয়না; তর্কের খাতিরে হলেও কোন একটা ব্যাপার এমন কদর্য ভাষায় উপস্থাপন করাটা সুস্থ্য মানসিকতার লক্ষন হতে পারে না।
কিন্তু পাল কে আজকের এই পাল বানিয়েছে কারা? 
  • এর মধ্যে আপনার আমার মত অসংখ্য লোকজন আছেন
  • আমি মেয়েদের সাথে উনার চ্যাট এর স্ক্রিনশট দেখেছি বেশ কিছু। আমি অত্যন্ত অবাক হয়েছি উনার মানসিক রোগের সকল আলামত দেখে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি ওইসব মেয়েদের দেখে যারা এইরকম অসভ্যতামি সহ্য করেও উনার সাথে চ্যাট coninue করে গেছেন। আমার তো মনে হয়েছে অনেকে মেয়েরই উচিৎ ছিলো উনাকে সাথে সাথে ব্লক করে দেয়া যেমনটা উনি ছেলেদের  ক্ষেত্রে করে থাকেন। তাহলে উনাকে একা দোষ দিচ্ছি কেন? আপনি একটা পাগলা কুকুর পুষবেন, কিন্তু সেটা কামড়ালে আবার সেটাকেই দোষ দিবেন, এটা মনে হয়না তেমন বুদ্ধিমানের কাজ। 
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জাতির বিবেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের নলেজ বেইজের লিড দেয় বিভিন্ন কারনে। জাতি ঢাবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্য চোখে দেখে, বিবেকীয় চোখে দেখে। তাই একটা পাগলা কুকুর রাস্তায় ঘেউ ঘেউ করলো আর ঢাবির মত প্রতিষ্টান সেটাকে লুফে নিয়ে ৫৭ ধারার মত একটা কালো ব্যাপারের বৈধতা দিবেন, এটাও আশা করিনি। তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর আমাদের বস্তাপচা রাজনৈতিক নেতারা যারা নাকি একজন ভিসির গালে চড় মারে তার মধ্যে পার্থ্যক্য থাকেনা। ঢাবিতে যারা আছেন তারাও নিশ্চয়ই পড়েছেন কুকুরের কাজ কুকুরে করেছে ... ... 

ভবিষ্যৎ কোনদিকে? 
  • পাল আসলে অতটা পরিচিত ছিলেন না এখন যতটা হলেন। আমি নিজেই কোনদিন এর নাম শুনিনি এর আগে। এমনকি পত্রিকায় কয়েকদিন নিউজ দেখেও আমি তা পড়িনি। কিন্তু অনেকদিন ধরে নিউজ হচ্ছিলো বিধায় পড়তেই হলো। তাহলে কি লাভ হলো? পালের নোংরা উদ্দেশ্যই কিন্তু সফল হলো। উনি নিজের এমনই পরিচিতি  চেয়েছিলেন হয়তো। কিছুদিন পরে দেশের পোলাপাইন এগুলো ভুলে আবারো তার কাছে বিসিএস নিয়ে পরামর্শ চাইতে গেলে উনি আবারো এমন নোংরামি করলে আমি অবাক হবোনা। ভাই রে, দেশের বেকারত্বের হারটা দেখুন, তাহলেই বুঝতে পারবেন।
  • কিছুদিন পরে পালকে সংখ্যালগু ইস্যু বানিয়ে দিলেও আমি অবাক হবো না। সেটা দিয়ে আরও কিছু chaos তৈরি করা যাবে

দয়া করে অন্ধভক্তি থেকে বের হোনঃ 
  • আমি আমার ছাত্রছাত্রীদের সবসময় বলেছি কারো অন্ধভক্ত না হতে। অন্ধতা নিজের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়। ছেলেমেয়েরা যদি বুজতো যে বিসিএস চেষ্টায় হয়, পালে বা অন্ধতায় নয়, তাহলে আজ পালের মত কাহিনী আমাদের দেখতে হতোনা।
  • অন্ধভক্তির কারনেই দেশে জঙ্গি হয়। ছোট ছোট ধর্মপ্রান লোকজনদের আনুগত্য পালদের মত কিছু নষ্ট মানুষ সন্ত্রাসবাদে পরিনত করে। তাই আমি সবাইকে বলি যে ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করুন, নিজে বুঝুন, তারপরে পালন করুন। কোন ধর্মই খারাপ কিছু বলেনা

প্রশ্ন করুনঃ 
  • কোন কিছু অন্ধের মত গিলবেন না দয়া করে। তাহলে আপনি না নিজের কাজে আসছেন না অন্য কারো
  • প্রশ্ন করুন নিজেকে, প্রশ্ন করুন নিজের আশপাশকে। প্রশ্ন করার মধ্যে কোন ক্ষতি নাই। 
  • নিজে নিজে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেন। কোন বিশেষজ্ঞ, মুফতি, বা নেতার উপড় ভরসা করবেন না। আপনি unique, আপনার জীবনের বিভিন্ন ঘটনার সাথে উনাদের ঘটনার মিল নাও থাকতে পারে।

ভাল থাকুন, সবাই

Monday, October 10, 2016

মাশরাফি, নাসির, পাপন, এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট


প্রথমেই বলে নেই আমি ক্রিকেট বিশারদ নই, তবে ক্রিকেট বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফ্যান। ফ্যান হিসেবে অন্য কোন দেশের বেলায় না হলেও দেশের ক্রিকেটের খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করি। তার উপড় ভিত্তি করেই এটা লিখছি; ভুল হলে শুধরে দিবেন দয়া করে।

নাসির কে যে খুব একটা চিনতাম এমনটা নয়। একদিন মাশরাফিকে বলতে দেখলাম যে এই ছেলেটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। যেহেতু ম্যাশ এর উপড় অগাধ আস্থা আমাদের, তাই তার কথা শুনার পরে নাসিরকে নিয়ে সজাগ থাকতাম। আসলেই ভাল খেলে ছেলেটা। ম্যাশ ভুল বলেন নি।

কিন্তু নাসির কে যেভাবে ক্রিকেট রাজনীতির স্বীকার হতে হয়েছে তা দেখে খুব বিরক্ত হয়েছি। হঠাৎ একদিন পাপন বরাতে জানতে পারলাম নাসিরের দলে সুযোগ না পাবার অন্যতম একটা কারন হচ্ছে তার অনেকগুলো মোবাইল ফোন এবং অনেকগুলো বান্ধবী। অনেকগুলো বান্ধবী রাখা কতটা নৈতিক, সে বিবেচনায় আমি যাচ্ছিনা। আমি বরং বুজতে পারছিনা পাপন এর কাজ টা কি। নাসিরের এতগুলো বান্ধবী যদি তার খেলায় বিঘ্ন ঘটায়, সেটা ম্যানেজ করার দায়িত্ব তো পাপন সহ ম্যানেজমেন্ট টীমের বাকি সবার। নাসির বাংলাদেশের মত গরিব দেশের অনেক বেতন পাওয়া মানুষ। তার কাছ থেকে সর্বোচ্চটা যাতে পাওয়া যায় সেটা নিশ্চিত করার জন্যই পাপন সহ একটা বিশাল টীমকে আরও অনেক অনেক টাকা দিয়ে পোষা হচ্ছে। কিন্তু পাপন গং কি নিজেদের কাজ করতে পারছে সঠিকভাবে? পাপনের তো নাসিরের কয়টা বান্ধবী আছে সেটা জনসম্মুখে এইভাবে বলার দায়িত্ব না। তার দায়িত্ব নাসিরের কাছ থেকে ভালোটা বের করে আনা এবং সেজন্য যা যা দরকার তার সবকিছু করা। এতে করে নাসির কে যদি বান্ধবীদের কাছ থেকে দুরে রাখতে হয় তাও তার ব্যবস্থা করার কথা। উনি সেখানে ব্যর্থও হলেন এবং গায়ের জোড়ে সকল রকমের ভদ্রতা বাদ দিয়ে একজন ক্রিকেটারকে মানুষের চোখে অনেক নিচে নামিয়ে দিলেন। খেলতে না পারার ব্যর্থতার কারনে যদি নাসিরকে দল থেকে বাদ পড়তে হয়, তাহলে পাপন কেন এখনো বহাল তবিয়তে? ওহ আচ্ছা, নাসিরের বাপ তো প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট না, তাইনা?

আচ্ছা, পাপনের বায়োডাটা কি কেউ দেখেছেন? উনার ক্রিকেটীয় কি কি এমন যোগ্যতা আছে যে উনি বাংলাদেশের মত একটা উদীয়মান দলের সবচেয়ে বড় কর্তা? উনার কোন ক্রিকেটীয় রেকর্ড আছে বলে আমি শুনিনি। উনি কি কোনদিন পাড়ার ক্রিকেট খেলেছিলেন? কেউ জানেন কি?

এর আগেও উনারা আল আমিন কে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে পাঠানো নিয়ে অনেক রসালো কাহিনি করেছিলেন। আল আমিন নাকি হোটেলের বাইরে অবস্থান করেছিলেন। ভাল কথা, এইটা অন্যায়। কিন্তু উনি এই অন্যায় রোধ করার জন্য কি করেছিলেন? উনি নিজে জুয়া খেলায় মত্ত থেকে বাইরে থাকতে পারবেন, কিন্তু আল আমিন আর মানুষ না (উনি অস্ট্রেলিয়া এসে মেলবোর্ন আর ব্রিসবেনে জুয়া খেলার আসরে ছিলেন এটা নিশিচত থাকতে পারেন, বাকিগুলো জানিনা)।  ওই একই আসরে সাকিব কে দেখলাম ব্রিসবেন থেকে গোল্ড কোস্টে ঘুড়ে বেড়াতে এখকানকার বাংলাদেশি ছাত্রদের সাথে। তখন দোষ হয় নাই? রুবেলের এত বড় কেলেঙ্কারি ও কিন্তু তাকে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে বাধা দেয়নি। তাহলে আবারো একই কথা, আল আমিন ছেলেটা কালা, দেখতে ভুতের মত, গাইয়া, এবং ভাত পাগল। এগুলোই অনেক বড় অপরাধ ছিলো।

পাপন গঙদের দায়িত্ব ক্রিকেট ম্যানেজ করা। ক্রিকেটে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করা না। উনার কাজ রুবেল বা নাসিরের বেডরুম পাহারা দেয়া না। ৩৪ বছরের রুবেল (আরেক রুবেল) ৮ না ১০ বছর পরে দলে সুযোগ পায়, কিন্তু ২৪ বছরের নাসির পায় না। বাংলাদেশের মানুষের কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে উনি নিজের ব্যক্তিগত ক্ষোভ উপহার দিবেন জাতিকে আবার দম্ভ ভরে বলবেন যে কার বদলে নাসির কে দলে নিবো? নাসির একটা উদাহরন মাত্র, যেটা ঘটনাচক্রে সামনে চলে এসেছে। আমরা কেউ ই জানিনা এইরকম আরও কত আছে পর্দার পিছনে।

যাকগে, আজকে আসলে বাংলাদেশ ইংল্যান্ড এর দ্বিতীয় ম্যাচের কথা বলতে চেয়েছিলাম। এই ম্যাচে নাসির খেলেছে অনেকটা দেশব্যাপী ওকে নিয়ে আলোচনার কারনে। সে ভাল করেছে বলে এই যাত্রায় বেচে গেলো। কিন্তু কিছু ব্যাপার লক্ষণীয়। নাসির কে কাল আসলে কোনো বিপদে ফেলার চিন্তা ছিলো কিনা টিম ম্যানেজমেন্টের?

নাসির একমাত্র বাংলাদেশী বোলার যে এই ম্যাচে ১০ ওভার বল করেছেন। ম্যাশ নিজেও করেন নি ১০ ওভার যদিও সে খুব সফল হচ্ছিলো বল হাতে এই ম্যাচে। এবং নাসির একটানা ১০ ওভার বল করেছেন। আমি কি ধরে নিবো যে নাসির কখন পিটানি খাবে সেই অপেক্ষায় ছিলো টিম ম্যানেজমেন্ট? উইকেট দরকার ছিলো, মোসাদ্দেক এক ওভার বল করে এক উইকেট পেয়ে গেলো। ওরে কিন্তু আর আনা হয়নি। কিন্তু নাসির বল করেছেন একটানা। পিটানি খায়নি, ওর কপাল ভাল, যদি খেত তাহলে নাসির তো এক চান্সে স্থায়ীভাবে দলের বাইরে চলে যেতো। পানি টানার সুযোগ ও হয়তো থাকত না। এবং পাপন এর হেভভি মাসল টাইপের মুখ থেকে আমরা আবার কিছু আবর্জনা বের হতে দেখতাম।

কাল নাসিরের কপাল সেইরকম ভাল ছিলো। শেষ যেই উইকেট নিয়ে মানুষ যখন আবার প্রথম ম্যাচ কে স্বরন করা শুরু করেছিলো, খোদার কুদরতে ওটাতেও নাসিরের নাম জড়িয়ে গেলো। ম্যাশ কি কোন প্রেসারে ছিলো নাসির কে নিয়ে? আমি ম্যাশকে সন্দেহ করছিনা, কিন্তু সে নিজেও পরিস্থিতির স্বীকার হতে পারে। ম্যাচের পরে ম্যাশকে নাসির সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সে সরাসরি উত্তর দেয়নি। সে বরং নাসিরকে নিয়ে করা প্রশ্নে রিয়াদকে নিয়ে উত্তর দিয়ে নাসির সম্পর্কে এক লাইন বলেছে। এটা দেখেই মনে হচ্ছে যে নাসির রে নিয়ে কেউ কিছু বলতে চায়না। পাছে পাপনের মাসল দেখতে হয় ! আমার অনুমান মিথ্যা হোক আমি নিজেই তা চাই। তবে যদি সত্যি হয়, ম্যাশ নিজেও একটা জুয়ার অংশ হয়ে গেলেন !

এই ম্যাচে অন্তত পাপনের মুখে তালা লেগে গেলো। কিন্তু এই তালা কয়দিন যে লেগে থাকবে আমার সন্দেহ আছে। আমি বরং ভয়ে আছি, যেসব আবর্জনা পাপন এই ম্যাচের পরে বিসর্জন দিতে পারেন নি, তা তো উনার পেটে গ্যাস তৈরি করবে। এই গ্যাস যখন ফেটে বেরোবে তখন তা নাসির বা অন্য কোন ক্রিকেটারকে কিভাবে ভোগাবে !

Wednesday, May 18, 2016

শিক্ষকের সম্মান এবং গনতামাশা !

একজন শিক্ষককে অপমান করেছে এবং সেটা করেছে অসম্ভব দৃষ্টিকটুভাবে। এখানে দুটো ব্যাপার রয়েছেঃ
  • একটা ক্রিমিনাল অ্যাক্ট, যেটা একজন মানুষের সাথে হতে পারেনা
  • একজন শিক্ষকের অপমান মারাত্মক symbolic যেটা সমাজের জন্য ক্ষতিকর

প্রথমটার জন্য উচিৎ শাস্তি দাবি করা এবং দ্বিতীয়টার জন্য দরকার মানসিক শিক্ষা। কিন্তু আমরা কি করছি? 
  • আমরা প্রথমেই নিয়ে আসছি লঘু বা গুরুর ব্যাপার। এতে ultimately উনার প্রতি যে একটা অপরাধ করা হয়েছে সেটা ঢাকা পরে যাচ্ছে। সবাই উনার ধর্ম বা উনি অন্য ধর্ম নিয়ে কিছু বলেছেন কিনা সেটা নিয়েই কথা বলছেন। কেউ বলছেন না যে উনার সাথে অন্যায় করা হয়েছে এবং সেটার জন্য আগে শাস্তি হওয়া দরকার। এইরকম ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের অনেক স্কুল বা কলেজে এইধরনের আকাম করা হয়। তবে একেক যায়গায় execution টা একেক ধরনের হয়। উনি হিন্দু বলে উনাকে ধর্মের ব্যাপার দিয়ে সাইজ করা সহজ মনে করেছে যারা এটার প্ল্যান করেছেন। কিন্তু সেজন্য উনার হিন্দুত্বকে কোনভাবেই সামনে নিয়ে আশা উচিৎ না। তাতে আসল অপরাধটারই বিচার হবেনা। আমরা এখন উনার ধর্ম বা আমার ধর্ম নিয়ে চিৎকার করে থেমে যাবো। কিন্তু যেটা আসল সমস্যা, দুর্নীতি বা অবৈধ কাজ, সেটা নির্মূল করার জন্য আওয়াজ তুলবো না। ফলে এইসব কাজ গতকাল হাজারীরা করতো, আজ ওসমানরা করছে, কাল অন্য কেউ করবে; কারন বিষবৃক্ষ তো থেকেই যাচ্ছে।
  • আজ অনেক কুতুবদের প্লাস অনেক সাধারন মানুষদের দেখছি কান ধরে ফেসবুকে ছবি দিতে। আমার হাসি পাচ্ছে, এদের self marketing স্টাইল দেখে। মনে হচ্ছে বাজারে নতুন কোন ফ্যাশন এসেছে। কিছুদিন আগে দেশের সকল বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে এমন কোন বাজে কথা নাই যেটা বলেন নি। এইরকম করে তো প্রতিবাদ দেখিনি। এইটা সত্যি যে আমরা স্কুল থেকেই শিক্ষার শুরুটা করি, কিন্তু স্কুলে যারা শিখান তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই তৈরি করে। কেউ কি কোনদিন দেখেছেন কোন স্কুল তার শিক্ষক বানাচ্ছে? বা কেউ একজন স্কুলের পর্ব শেষ করেই শিক্ষক হতে পেরেছে? তাহলে সেদিন কি সমস্যা ছিলো প্রতিবাদ করতে? প্রতিবাদ তো হয় - ই - নি, বরং শিক্ষকদের নিয়ে যা তা ও বলেছেন অনেকে। কেন ভাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি নর্দমার কীট নাকি? নাকি আপনি বলতে চাইছেন যে আপনি এইসব শিক্ষকদের চেয়ে বেশি মনে রাখেন আপনার স্কুলের শিক্ষক কে? তা বলতে চাইলে, ওইটা একটা ফাইজলামি হবে ! কারন আমি কোনদিন দেখিনি কোন ছাত্র এসে বলেছে তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের চেয়ে প্রাইমারি বা মাধ্যমিক স্কুল জীবন অনেক বেশি স্মরনীয় ! হ্যা, বলতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ভাল না। সত্যি কথা, কিন্তু বাংলাদেশ বা পৃথিবীর কোনা জায়গায় সব কিছু ভাল আছে?
সেদিন যদি শিক্ষকদের সম্মান নিয়ে প্রতিবাদ হতো, আজকে এইটা নাও হতে পারতো। সেদিন আমরা যারা শিক্ষক তারা বুঝেছিলাম, দেশের সাধারন জনগন কতটা শিক্ষা বিমুখ আমাদের নেতাদের মত। এখন আজ এসে যখন সেই জনগন নিজেদের শিক্ষা বান্ধব বলেন, বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় বৈকি। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সম্মানিত হলে, আজ স্কুলের শিক্ষকরাও হতেন। কারন, যেকোন গাছের মাথায় পানি দিলে সেটা নিচে নামতে বাধ্য।

Tuesday, March 29, 2016

রাষ্ট্রধর্ম এবং বিড়ম্বনা

১।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করিনা ইসলাম কায়েমের জন্য ইসলাম কে রাষ্ট্রধর্ম করার দরকার আছে। বরং এতে যারা মুসলিম না তাদেরকে অস্বীকার করার একটা প্রবণতা আছে। সেটা কতটা ইসলামিক আমি সেই সম্পর্কে জানিনা। তাই আমি ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে সবসময়। আমার মনে আছে নবীজি যখন মক্কার সাথে চুক্তি করেছিলেন তখন মক্কানরা উনাকে নবী মানতে নারাজ ছিলেন এবং উনার নামের সাথে উনি যে আল্লাহ এর রাসুল সেই অংশ বাদ দিতে বললেন। নবীর সাথীরা সেটা মানতে নারাজ ছিলেন এবং এক পর্যায়ে নবী নিজেই ওই অংশ কেটে দিয়েছেন। তো এখান থেকে কি শিক্ষা পাওয়া যায়?
২।
একটা রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কোন ধর্ম থাকলেই সেই রাষ্ট্রটা নষ্ট হয়ে যায় এমন কোন কথা নাই। পৃথিবীতে ৩০ বা তার চেয়ে কম দেশ আছে যাদের রাষ্ট্রধর্ম নাই। তাছাড়া বাকি সবারই তা আছে। তো এইসব দেশগুলোতে কি সংখালগুরা থাকেন না? থাকেন এবং বহাল তবিয়তেই আছেন। কেমনে বুঝলাম? নিজের অভিজ্ঞতা তো আছেই। তাছাড়া এখন অনেক কে দেখছি ওইসব দেশে বসে ফেসবুক ফাটিয়ে ফেলতে বাংলাদেশে কেন ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হলো তা নিয়ে। উনারা পারলে দেশে এসে দেশের সবাইকে মেরে তক্তা বানিয়ে দিয়ে যান। এমনভাবে কথা বার্তা বলেন যে মনে হয় এই দেশে কোন মানুষই থাকেন না; সব জানোয়ার থাকেন। এরা দেশে থাকতে বা দেশে আসলে বুক ফাটে তো মুখ ফুটেনা এইরকম আচরন করেন আর বিদেশে গেলে মুখ ফুটিয়ে দেশের মান সম্মানের বারটা বাজান। আজীবস সব চিড়িয়া এগুলো। কয়দিন আগে এই রকম এক পিস রে দেখলাম জার্মানি বসে ঢাকায় প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার আমন্ত্রন জানাতে। এদের কাছে সবিনয় আবেদন, দয়া করে বাংলাদেশ কে মাফ করে দেন। আপনাদের মত 'বাইরে বাঘ, ভিতরে বিড়াল' টাইপের মানুষদের বাংলাদেশ কে নিয়ে এতো চিন্তা না করলেও চলবে। দেশটা খারাপ আছে, তারপরেও ভাল আছি।


এইরকম পিস অবশ্য দিন দিন বাড়ছে এবং আজকাল হরহামেশাই দেখতে পাওয়া যায়। ব্রিসবেনে একাধিক বাঙ্গালীকে বলতে দেখলাম বাংলাদেশ আমাদের কি দিয়েছে? নিজ কানে শুনেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো। যেই লোক বাংলাদেশের আলো বাতাসে বড় হয়ে আজ অস্ট্রেলিয়াতে পিএইচডী করতে গিয়ে এই ধরনের কথা বলতে পারে, তার মত লোককে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে ভুল করেছে বলেই আমার মনে হয়।
৩।
আরেকটা প্রজাতি আছে যারা বারবার বলছে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হয়েছে, এখন কি চুরি থামবে, ধর্ষন থামবে, রিজার্ভ এর ফেরত যাওয়া টাকা ফিরে আসবে, বা তাসকিন কি ফিরে আসবে ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাইরে, কোথাকার পানি কোথায় নিয়ে যান? ইসলাম কে রাষ্ট্রধর্ম করার সাথে এগুলোর সম্পর্ক কি? খালি খালি কেন মানুষের মধ্যে কনফিউশন তৈরি করেন? আপনার হয়তো অনেক ভক্ত আছে, আপনি এইরকম দায়িত্বহীন লিখার পরে যদি আপনার ভক্তরা তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়িত্বহীন আচরন করলে তার দায়িত্ব কি আপনি নিবেন? তাছাড়া আপনার কি মনে হয়না আপনি ইসলাম ধর্মের উপড় একটু বেশিই নির্ভর করছেন সেইসব মানুষের জন্য যারা এখনো ঠিকমত ইসলাম কে বুঝেই না? আবার, অমুসলিমদের দ্বারা কৃত অপরাধগুলোর তাহলে কি হবে? নাকি আপনি বলতে চাইছেন যে অপরাধ শুধু মুসলিমরাই করেন?


তাই চলুন বাস্তবে আসি। ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রাখি। অন্যায়কে অন্যায়ের জায়গায় রাখি। নিজের ধর্ম নিজের মত করে পালন করি এবং সকল অন্যায়ের ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে প্রতিবাদ করি।

Thursday, March 17, 2016

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ এবং আমাদের আবেগ

যখন সারা পৃথিবীর এখানে সেখানে টাকা হ্যাক হচ্ছে এবং হ্যাকিংটা যুগ যুগ পুরানো ব্যাপার, সেখানে একজন গভর্নর এই জিনিসটা ধাক্কার সাথে নিবেন এবং তাও আবার ঘটনা ঘটার পরে, এইটা মনে হয় এক ধরনের দায়িত্বে অবহেলাই। কারন আমি যতটা বুঝি ঘটনা ঘটার পরে অবাক হবার পরিবর্তে উনার দায়িত্ব নেয়ার পরেই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ছিল। প্রশ্ন আসতে পারে, উনি ব্যবস্থা নিলেও কি এইরকম হতে পারতোনা? হতে পারতো, কিন্তু তখন উনাকে হয়তো ব্লেম নিতে হতনা। উনার লেখা পদত্যাগপত্র পড়ে বুঝা যাচ্ছে উনি খুব অবাক হয়েছেন এবং পুরো ব্যাপারটা বুঝতেই উনার সময় লেগেছে। এইটাকে উনার কাছে জঙ্গি হামলার মত মনে হয়েছে। ব্যংকিং সেক্টরের অতি পুরনো একটা রোগকে বুঝতে উনার এতো সময় লেগেছে - -  এইটা এক ধরনের ব্যার্থতার মধ্যে পড়ে বৈকি। উনার দ্বিতীয় ব্যার্থতা হলো উনি প্রশাসনকে জানিয়েছে দেরি করে। এইটা ঠিক ডেকোরামের মধ্যে পড়েনা। আপনার বস যতই অপদার্থ হোক, সে আপনার বস। আপনার বস অপদার্থ হলে আপনার আসলে দুটা দায়িত্ব থাকেঃ বসকে জানানো এবং বস যাতে অপদার্থের মত কোন স্টেপ না নেয় সেটা এনসিউর করা। উনার এখানে সমস্যা ছিলো এবং সেটার মূল্যই উনাকে দিতে হলো। প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের দেশের রাজনীতি খারাপ। ট্রাস্ট মি, পৃথিবীর কোন দেশেই এই রাজনীতি নামক জিনিসটা ভালো না।

উনার পদত্যাগ? আমার মতে উনার আগেই পদত্যাগ করা উচিৎ ছিলো। এবং সেটা স্বেচ্ছায়ই হওয়া উচিৎ ছিল। অনেকে অমত করবেন, তবে পদত্যাগটা যে স্বেচ্ছায় হয়নাই এইটা মনে হয় বুঝা যায় সহজেই। আমার ধারনা উনি পদত্যাগ হয়তো করতেন আগে বা পরে, তবে আরেকটু সময় নিতেন পুরো ব্যাপারটা নিয়ে। আমার বিরক্তি লাগছে উনার পদত্যাগ নিয়ে মানুষের আলোচনার টপিক দেখে, উদাহরনঃ চোখের পানি, দেশপ্রেমিকের শাস্তি, শেখ মুজিব, এবং আরও কত কি। ভাইরে, এখানে শেখ মুজিবের কিছু করার নাই। একজন গভর্নর চলে যাচ্ছেন পরিস্থিতির কারনে সেটা নিয়ে চোখের পানি ফেলারও কিছু নাই। উনি যোগ্য ছিলেন বলে উনাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু এই কথা উনি নিজেও কোনদিন বলেন নি যে উনি সব কাজে যোগ্য। তাই উনার চলে যাওয়াটা একটা দুর্ঘটনা। কান্নাকাটি বাদ দিয়ে ভালো করে খোজ করলে হয়তো যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তার চেয়ে ভালো গভর্নর পেতে পারতো বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ছোট বাংলাদেশেরও কিছু লোকজন আছে যারা নিজের যোগ্যতায় হার্ভাড বা অক্সফোর্ড থেকে পড়ে এসেছেন বা এখনো ওখানে চাকরি করছেন। কান্নার বদলে একটু ভালো করে খোজ করলেই দেশের ভালো হতো।

দেশপ্রেম? আমি একমত উনার মত স্মার্ট গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংক এরা আগে কতজন পেয়েছে সন্দেহ আছে। কিন্তু তাই বলে উনার দেশপ্রেম শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি দিয়ে পরিমাপ না করি। উনার দেশপ্রেম পুরো দেশের জন্য এবং আমি নিশ্চিত উনি যেখানেই থাকুন না কেন দেশকে সার্ভ করবেন। আরও একটা ব্যাপার হল, উনার দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলা সহজ, কারন উনাকে নিয়ে আমরা যার উপড় ক্ষোভ প্রকাশ করছি সে একটা অপদার্থ। কিন্তু সবাই যদি আমরা দেশপ্রেমিক হতাম তাহলে একজনের দেশপ্রেম নিয়ে এমন হই চই করতে হতনা আমদের।

Friday, March 4, 2016

সাকিব অধ্যায় এবং আমাদের প্রেম


প্রথমেই বলে নেই আমি ক্রিকেটার নই, ক্রিকেট বুঝিওনা ভাল করে। তবে অতটুকু বুঝি বৈকি যতটুকু বুঝলে ফ্যান হওয়া যায়। তো সেই বিচারেই আমার মতামত। মন্তব্য করার আগে দয়া করে আমি যে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ নই সেটা মনে রাখবেন।

সাকিব আল হাসান আমাদের ক্রিকেটের অতি উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার অবদানও কম নয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে। সবদিক বিবেচনায় নিকট অতীতে, আমার মতে, বাংলাদেশের কেউই তার সমকক্ষ ছিলোনা। তবে এখন আমি মাশরাফিকে সাকিবের চেয়ে এগিয়ে রাখবো। মাশরাফি এখন আমাদের ক্রিকেটের brand ambassador. তরুন প্রজন্ম ক্রিকেটার হবার প্রেরনা মাশরাফির কাছ থেকে বেশি বই কম নিচ্ছে বলে আমার মনে হয়না। মজার ব্যাপার হলো মাশরাফি দিন দিন যতটা ভদ্র হচ্ছে সাকিব ততই তার উল্টো দিকে হাটছেন। গত কয়েক বছরে উনার আচার আচরন বিবেচনায় আনলে  উনাকে মানুষ হিসেবে কোনভাবেই তরুন প্রজন্মের জন্য আদর্শ বলা যাবেনা। একজন মানুষ তখনি প্রকৃত মানুষ হতে পারে যখন বড় হবার সাথে সাথে সে ছোট হয়। সাকিবের মধ্যে আমি সেটা দেখিনা, অন্তত ক্রিকেট মাঠে। শচীন বা লারা কে কোনদিন এইরকম ব্যবহার করতে দেখিনি। লারার কথাবার্তা দেখলে নিজেকে আরও বেশি ভদ্র করার প্রেরনা পাই। এতবড় ক্যারিয়ারে লারা বা শচীনের কয়টা স্ক্যান্ডাল আছে? সাকিব আমাদের ছোট দেশের বড় তারকা, তার খতিয়ান লারাদের সাথে তুলনা করলে লজ্জাই পেতে হবে।  আমার মনে হয় উনি কম শাস্তিই পেয়েছেন; এইটা আশা করছি বাংলাদেশের জন্য সুখবর হবে ফাইনালের দিন। আইসিসির একটা অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোডে পড়ার কারনে শাস্তিটা কম হয়েছে। তবে এটার এই মানে করবেন না প্লীজ যে আমি চাইনা সাকিব ফাইনাল খেলুন।

তারপরেও আজকের লেখায় আমি আসলে সাকিবের আচার ব্যবহার নিয়ে বলতে চাচ্ছিনা। বরং আমি আমাদের আচার আচরন নিয়ে কথা বলতে চাইছি। আমরা একধরনের আলট্রা ইজমে ভুগছি। যারা সাকিবের এইরকম আচার আচরন এবং বাজে পারফরমেন্সে বিরক্ত তারা তাকে যা ইচ্ছে তা বলছেন, গালাগালিও করছেন। আমি বুঝিনা একজন মানুষকে পছন্দ না করলেই তাকে গালি দিতে হবে কেন? এটা খুবই অন্যায় এবং highly demotivating. আমি একজনকে অপছন্দ করতেই পারি, কিন্তু তাকে অপমান বা অসম্মান করার অধিকার আমি রাখিনা। ফ্রিডম অফ স্পীচ অন্যের বিরুদ্ধে যা তা বলার অধিকার দেয়না। সাকিবদের এইরকম গালাগালি করার মাধ্যমে আমরা আমাদের কাপুরুষতার পরিচয় যেমন দিচ্ছি তেমনি অন্যদেরও এক্সট্রিম করে তুলছি।

এইবার মুদ্রার অপর পিঠে আসি। মুদ্রার এই পিঠে আছেন সাকিবের সমর্থকরা। উনাদের দৃষ্টিতে সাকিব মেসিয়াহ। তার কোন ভুলই ভুল না। উনারা সাকিবের এইসব বর্জনীয় আচরণকেও নিন্দা জানাতে অনিচ্ছুক। বরং কেউ সাকিবরে নিয়ে কিছু বললেও উনাদের মারাত্মকভাবে লাগে এবং তার উপড় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। উনারা সাকিবরে ছেলেমানুষ হিসেবে দেখেন। কিন্তু তাকে আবার আইডল হিসেবেও উপস্থাপন করেন। কেউ সাকিবের দোষগুলোকে ভদ্রভাবে উপস্থাপন করলেও সাকিব সমর্থকদের আচরন বিশ্রী পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। সমর্থকরা অস্বাভাবিক আচরন করেন এবং  মাঝে মাঝে অকথ্য গালিগালাজও করেন। তাই, আমার দৃষ্টিতে এই লোকগুলোর সাথে আর যারা সাকিবদের গালি দেয় তাদের তেমন বেশি পার্থক্য নাই। গালাগালি করলে সাকিবরা demotivated হয়, আর এইরকম অন্ধ সমর্থন করলে motivated হয়। কিন্তু এই motivation সাকিবদের arrogant করে তুলে, অন্তত বাংলাদেশে। আম্পায়ারকে না বলে দাদ্বশ খেলোয়াড়কে মাঠে ঢুকতে বলা, বোর্ডকে না জানিয়ে বাইরে খেলতে যাওয়া, ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়ে পছন্দের খাবারের জন্য অহেতুক হাজারো পাউন্ড খরচ করা, এবং আউট হয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত করা --- এই ব্যবহারগুলো কিন্তু তাই প্রমান করে।

তাই আমি মনে করি গালাগালি যেমন বন্ধ করা উচিৎ, তেমনি সাকিবকে এইরকম অদ্বিতীয় ভাবে উপস্থাপনটাও বন্ধ হওয়া উচিৎ। কারন আলট্রা কোনকিছুই ভালনা। যারা আমার সাথে একমত নন, তাদেরকে নিচের এই ভিডিওটা দেখার অনুরোধ করছি। এই ভিডিওটা ultra nationalism এর চরম নোংরা উদাহরন। তবে বলে রাখছি, এই ধরনের ভিডিও দেখতে আপনার অনেক বেশি ধৈর্য্য থাকতে হবে। প্রায় প্রায়ই আপনার মনে হবে এই লোকগুলো বর্বর। এরপরেও আমি দেখেছি, শুধু বুঝতে মানুষ কতটা বর্বর হতে পারে টকশোতে !

Sunday, February 21, 2016

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং চেতনা

আমাদের conceptualization সবসময়ই কিছু সমস্যা থেকে যায়। এই যেমন আজকের দিনটি নিয়ে। একটা সময় এটা ছিল শুধু আমাদের, এখন এটা বিশ্বের। দিবসটি বিশ্বের হওয়াতে এর ধরনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আমাদের কাছে এই দিনটার দুটো আবেদন আছেঃ শহীদের সম্মান জানানো এবং নিজের ভাষাকে রক্ষা করা। তাই আমরা যেমন শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করি ফুল দিয়ে তেমনি ভাষার চর্চাও করি। কিন্তু সারা পৃথিবী তা করেনা; তারা ২য় অংশটাই বেশি পালন করে। এটা গুরুত্বপূর্ন কারন পৃথিবীর অনেক ভাষাই হারিয়ে যাবার হুমকির মুখে আছে।

তো আমরা আসলে কি করি?
  1. ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। অনেক জ্ঞানপাপীরাই বলছেন যে শ্রদ্ধা জানানোটা ফেইক, চেতনার ব্যবসা ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা না করে দোয়া করা যেতো, শহীদদের পরিবারের খবর নেয়া যেতো। খুবই উত্তম প্রস্তাব। কিন্তু পরেরগুলো করতে গেলে প্রথমটা করা যাবেনা কেন এইটা আমার মাথায় ধরেনা। উনারা আসলে এইটাকে ফুল পুজো হিসেবে দেখেন ! ফুল পুজোতে দুটা সমস্যাঃ এক- ভারতকে অনুসরন করা হয়, দুই-ইসলামের বিরুদ্ধে যাওয়া হচ্ছে। উনাদের ইসলামের প্রতি যত ভালবাসা ঠিক ততটাই ঘৃনা ভারতের প্রতি। অন্যকে ভালবাসতে না পারলে ঘৃনা করতে হবে এইটা মনে হয় ইসলামও বলেনা। এই জ্ঞানীদের জ্ঞান দেখলে আমার মাঝে মাঝে বমি আসে। এই জ্ঞানীরা পুজো আর সম্মানকে এক জায়গায় এনে দাড় করিয়ে দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে আবার অনেক বড় বড় উন্নত দেশে বসে এইসব জ্ঞান বিতরন করেন। উনারা ওখানে কিন্তু মাঝে মাঝেই ফুল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যান শ্রদ্ধা জানাতে। তখন সেটা পুজো হয়না। উনারা আসলে আমাদের রাজনীতিবিদদের মতঃ নিজেরা খাবেন, অন্যকে খাইতে দিবেননা। এদের কাজ কর্মের সাথে শাম্মী হকদের জার্মানি থেকে বাংলাদেশে প্রকাশ্য চুমু খাওয়ার আহবানের অনেক মিল আছে। শাম্মী হকরা যেমন ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের জার্মানি থাকা নিশ্চিত করে, তেমনি এরাও মানুষদের ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে নিজেদের ব্যবসা চালু রাখে। আমার কাছে এইসব লোকগুলোই প্রকৃত চেতনা ব্যবসায়ী 
  2. দোয়া করতে তো কেউ মানা করেনি। অনেক জায়গায় হয়তো দোয়া করাও হয়। আচ্ছা ধরে নিলাম করা হয়না। তাহলে চলুন দোয়া করার জন্য মানুষদের আহবান জানাই। কিন্তু বিভেদ সৃষ্টি করছেন কেন? কাদা ছোড়াছোড়ি করছেন কেন? শহীদদের পরিবারের খবর না নেয়াটা আমাদের জন্য পাপের সমান। চলুন এটা নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করি। কিন্তু সম্মান করাটা বন্ধ করার দরকার কোথায়?

আমরা বাড়াবাড়ি করি কোথায়? 
  1. সারাদিন মাইকে গান এবং বক্তব্য বাজাই। ঢাকা শহরে যেখানে মানুষজন বাসায় থাকতে পারেনা গাড়ির হর্নের কারনে, সেখানে এই যে মাইকগুলো বাজানো হচ্ছে, এইটা দিয়ে কোন ধরনের চেতনা জাগানো হয় তা আমার মাথায় ধরেনা। আমি যতটা বুঝি এটা দিয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হয় এবং জনগন কোন কিছু বিশ্লেষন  না করে পুরো ভাষা দিবসটাকেই একটা বিরক্তিকর ব্যাপার ধরে নেয়
  2. অন্য ভাষাকে গালাগালি করি। ব্যাপারটা যখন আন্তর্জাতিক হয়ে গেছে তখন আর অন্য ভাষাকে নিয়ে বাজে কিছু বলার সুযোগ নাই। বরং আমাদেরকেই এখন বলতে হবে অন্য ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। তাই অন্য ভাষা নিয়ে বাজে মন্তব্য  আমাদের দৈন্যতাকেই প্রকাশ করবে এবং সেটাই হবে চেতনার অবনমন

Tuesday, January 12, 2016

শিক্ষকদের লজ্জা পাওয়া উচিৎ নয় কি?

আমার ব্যক্তিগত মতামত হল যে 'কোন বিশেষ ধরনের সুবিধা' বাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়। এই যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অসীম সম্মান আছে, কিন্তু তাদের কোটা নিয়ে বাংলাদেশে যা করা হলো বা হচ্ছে তা দেখলে উনারা দেশটাকে স্বাধীন করতেন বলে আমার মনে হয়না। কারন মুক্তিযোদ্ধা কোটা যদি হয় অযোগ্যদের যোগ্য করে তোলার হাতিয়ার এবং যোগ্যদের ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলার প্রধান অস্ত্র, এর চেয়ে বড় পরাধীনতা আর কি থাকতে পারে একটা স্বাধীন দেশে? সম্মানটা আসলে মুক্তিযোদ্ধাদেরই দেয়া উচিৎ ছিলো। উনাদের দিকে তাকিয়ে উনাদের পুত্র/কন্যাদের বিচরণ এমন অবাধ করার কোন দরকার ছিল বলে মনে হয়না। আজ সকালেই পত্রিকায় দেখলাম অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন তার এক অত্যন্ত বিখ্যাত কলিগের ছেলে বলে যাকে জাবিতে নিয়োগ দিয়েছিলেন তার নাম আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋনখেলাপির তালিকায় আছে।

তো আপাত সব সম্ভবের এই দেশে সিলেকশন গ্রেড জিনিসটা আরেকটা বৈষম্য তৈরির হাতিয়ার বই আর কিছুই নয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা বলছি। সিলেকশন গ্রেড এর প্রতিটি পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রাজনীতির নোংরা খেলা। ব্যতিক্রম আছে বৈকি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ এবং পদোন্নতি নিয়ে যেসব রাজনীতি হয় তারই সবশেষ ধাপ হলো এই সিলেকশন গ্রেড। কেউ কেউ PhD নিয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান আবার কেউ কেউ কোন ধরনের যোগ্যতা পুরন না করেই সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান - - এইসব নজির কিন্তু আশেপাশে তাকালেই দেখা যায়। আর সরকারি দলে না থাকলে পদন্নোতি নিয়ে যেসব হয়রানি হয় তা আর কি বলবো !! তাই সিলেকশন গ্রেড না থাকাটাকে আমি মন থেকে অভিবাদন জানাই। যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং বয়সের ভিত্তিতে কিছু মানুষকে খালি খালি ই ব্রাহ্মণ বানিয়ে দিয়ে পুরা কমিউনিটিতে একটা বিভেদ তৈরি করা হয় সিলেকশন গ্রেডের মাধ্যমে। অনেক যোগ্য এবং মেধাবী শিক্ষকদের দেখেছি অবসরে চলে যাচ্ছেন কিন্তু সিলেকশন গ্রেড পাননি, অথচ উনার চেয়ে অনেক কম যোগ্যতার শিক্ষক তা পাচ্ছেন !

আমি যতটা বুঝতে পেরেছি এই বিভেদ তৈরিকারী অস্রটিকে পূনর্বহাল করার জন্য সাধারন শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন না। উনারা সম্মানের জন্য আন্দোলন করছেন। একটা স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের জন্য আন্দোলন করছেন। কিন্তু আন্দোলনের তথাকথিত নেতাদের দাবিদাওয়া আজকাল শুধুই সিলেকশন গ্রেড আর লোন সুবিধা নিয়ে। আমি বুঝে পাইনা এরা নেতা হয় কি করে? এদের সাথে তো সাধারন শিক্ষকদের কোন কানেকশনই নাই !! এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। অন্যদিকে সাধারন শিক্ষকরাও মুখে তালা মেরে বসে আছে যতটুকু মানসম্মান অবশিষ্ট আছে সেটুকুও হারানোর জন্য। এটাও কম লজ্জার নয় !!

:: প্লেজারিজম এবং ফিডম ফাইটারস এর এস নিয়ে টানাটানি ::

 মানুষজন প্লেজারিজম নিয়ে কথা বলছে ফেসবুকে। ভালো লাগছে যে এতে যদি কারো কারো সেলফ - এস্টীম জন্মায়। চাকরির শুরুতে সব কাজ করার পরে যখন দেখতাম আর...