এই যে আমি যা ইচ্ছা তা ই করতে পারি জাতীয় সংকেতগুলো ভালো না। এগুলো ইতিহাসের মধ্যে নতুন ইতিহাস তৈরি করে এবং কাউকে কাউকে একেবারেই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়। বাংলাদেশে ইতিহাসকে লালন করা পরিবারগুলো যদি ইতিহাসের শিক্ষাকে ধারণ না করে এটা তাদের এক ধরনের ব্যর্থতা। দুঃখজনক হলো এরজন্য দেশকে অনেক মূল্য দিতে হয়।
- একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার কে ভারপ্রাপ্ত ভিসি করে কি সংকেত দেয়া হচ্ছে? কাকে দেয়া হচ্ছে এই সংকেত? কারা লাভবান হবে এতে? একটা দেশের শিক্ষাখাত যেখানে এখনো নকলের মহামারি কাটিয়ে নিজেকে দাড় করাতে পারেনি, সেখানে এই খাতটি নিয়ে এসব তামাশা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই যে আমি কাউকেই পাত্তা দেইনা, বা আমার ইতিহাসই সব, অন্য সকল ইতিহাস বা আবেগ তিস্তার পানির মতো যে থাকলে থাকলো না থাকলে নাই - এই মনোভাব একেবারেই ভালো না।
- দিনে দুপুরে খুন ধর্ষন হচ্ছে, দলীয় ছেলেরা করছে, কিন্তু বিচার হচ্ছেনা। এমসি কলেজ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বর্বর রা বর্বর ই থাকে, করোনাও এদের পরিবর্তন করতে পারেনা। কিন্তু এদের মতো বর্বররা বেঁচে যায়/যাবে দলীয় পরিচয় থাকার কারনে। সব সরকারের আমলেই তা হচ্ছে।
- ভারতকে সব খুলে দিয়ে কি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে? দেশের বারোটা বাজতে কি খুব বেশি বাকি আছে? আমার অবস্থান স্পষ্ট এখানে - কেউ যদি বাংলাদেশকে ভারতের আরেকটা রাজ্য বানাতে চায় সেটা স্পষ্টই বলা উচিৎ। অন্যথায় বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশের মতোই থাকতে দেয়া উচিৎ। বাংলাদেশের আচরণ একটা স্বাধীন দেশের মতো হওয়া উচিৎ। অবস্থান পরিষ্কার হলে দেশের মানুষের উপড় দায়িত্ব বর্তাবে তারা কি চায়, তখন মানুষই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। ৭১ এর শিক্ষা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে কেন? মুখে ৭১ এর ফেনা তুলে মনে মনে আইয়ুব ইয়াহিয়া পালন করলে তো হবেনা।
- শিক্ষকসহ অনেকে একটা দেশের এই মৃত্যুযাত্রায় বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছেন। অন্যদের নিয়ে কিছু না বললেও শিক্ষকদের দেখে আমার আফসোস হয়। আবার হয় ও না। এদের শিক্ষক হওয়াও এই মরন নাটকের নাট্যকারদের করুনা, তাই শবযাত্রায় এরা শামিল হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি শুধু ভাবছি জার্মানির ১৯৪৫ সাল ও একইরকম ছিলো বোধকরি!!
এই কথাগুলো আমার প্রজন্ম যত সরকার দেখেছে সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শুধু অত্যাচার আর অনিয়মের তীব্রতা বেড়েছে দিনকে দিন। আমরা এখন অনেক ক্লান্ত এসব নিয়ে, এসব থেকে পরিত্রাণ চাই।
Saturday, September 26, 2020
অসহনীয় সংকেত
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অপমান
[একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গ]
অবাক অনেকে হচ্ছে, আমি বাংলাদেশের শিক্ষাখাতের অসভ্যতামি নিয়ে অবাক হওয়া অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। এরপরেও এখানে একটু অবাক হলাম। এরকম একটা ঘটনা কি করে ঘটে? বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ফাইলে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে এই ফাইলে অনেক দপ্তর ঘুরে - শিক্ষা, প্রধানমন্ত্রী ইত্যাদি... কারোরই এই অসঙ্গতিটা চোখে পড়লোনা? দুটো ব্যাপার হতে পারে ... প্রশাসনে যারা কাজ করেন তারা একেবারেই অথর্ব অথবা পা থেকে মাথা পর্যন্ত মরিচা পরে গেছে!
বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন আঙ্গিকে মেশা বা কাজ করার সূত্রে বুঝতে পেরেছি সরকারি চাকুরেরা বিশেষ করে বিসিএসের মাধ্যমে যারা সরকারি চাকরিতে ঢুকেন তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের খুব একটা পছন্দ করেন না। এদের শিক্ষার প্রতি বিশাল ক্ষোভ, এবং কারো কারো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে না পারার ক্ষোভ! ইনারা ইনাদের কাজে কর্মে যতভাবে সম্ভব এই শিক্ষকদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে হেনস্থা করতে এক পা ও পিছু যান না... কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ গিনিস বুকে নাম লিখানোর মতো একটা কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটা কমিটি করেছে যেখানে একজন শিক্ষক ও ছিলেন না। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী কারোরই কোন সমস্যা দেখা যায়নি এইরকম একটা অস্বাভাবিক ব্যাপারে।
আরো কিছু গ্রুপ নিজের স্বার্থে বা হীনমন্যতায় সাগ্রহে যোগ দেন এই ঘৃণার উৎসবে। তারা কারা?
- সদ্য পাশ করে বের হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটরা। এরা বাইরে গিয়ে এক খান ১০হাজার টাকা বেতনের চাকরি জুটাইয়া নিজের থেকে ২ বছরের সিনিয়রকে বস হিসেবে পেয়ে স্যার বলতে বলতে মুখের ফেনা বের করেন, কিন্তু সুযোগ পেলেই নিজের শিক্ষকদের ধুমাইয়া গালি দেন। নিজের স্যারদের নামের পরে স্যার যুক্ত করতে ভীষণ লজ্জা পান, পাছে কেউ আবার ইনাদের ব্যাকডেটেড ভাবে। যেসব গ্রাম থেকে আসা ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো জামাকাপড় পড়া শিখাইছি তারা এখন মূল্যায়ন করে আমাদের ... তাদের থেকে কতো টাকা কম বেতন পাই, তাদের থেকে কতোটা কম আরামের জীবনযাপন করি, আমাদের উপরি কামাই আছে কিনা বা কত এইসব দিয়ে... ব্যর্থতা আমাদের, শিক্ষা দিতে পারিনি!
- পুলিশ ও আর্মিঃ এই দুইটা গ্রুপই একধরনের মানুষ পিটানোর বিকৃত প্রশিক্ষন নিয়ে জীবনযাপন করে। নিজেরা স্বাধীন দেশে পরাধীনের মতো থাকে, কারন দুই চারজন হোমরা চোমড়া ইনাদের চালান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানুষজন এহেন স্বাধীনতা ভোগ করবে, এই ব্যাপারটা উনারা ঠিক হজম করতে পারেন না। একবার শুধু জেনে দেখবেন পুলিশ বা আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পিটিয়ে কি মজা পায়!!
- আমাদের সবার প্রিয় রাজনীতিবিদরাঃ ইনাদের সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলবো যে বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লে ওখানকার পরিবেশ বা শিক্ষা সম্পর্কে কারোরই সম্যক বা সঠিক জ্ঞান থাকার কথা না। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক হলো, উনারা যেটা জানেন না সেটা জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যান না, যান ঐ যে সেসব মানুষদের কাছে যারা অলরেডি শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘৃনা করে...
ঈমান ও আমল
- বন্ধু হতে হয় আবু বকর (রাঃ) এর মতো যে কিনা এক বাক্যে বলে দেয় যে উনি [নবী]যদি এটা বলে থাকেন তাহলে তা অবশ্যই ঘটেছে [ঘটনা শবে মেরাজ]। ভিতরটা পরিষ্কার থাকা চাই সবার আগে...নইলে কিছুই হয় না কাকা!
- বিশ্বাস এবং লয়্যালটিও আবু বকরের মতই হওয়া চাই। নবী/রাসুল রা কোন সম্পত্তি উত্তরাধিকারস্বরূপ রেখে যান না এই হাদিসকে মেনে এবং হাদিসের পবিত্রতা রক্ষা করে উনি নিজের মেয়ে [নবীজীর স্ত্রী] ও নবীর মেয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নবীর মেয়ে যার সম্মান কিনা অনেক উঁচুতে তিনি এই ঘটনার কারনে আবু বকরের সাথে ৬ মাস ধরে কথা বলেন নি, কিন্তু আবু বকর হাদিসের বিপরীতে যান নি। এইপারের চেয়ে ঐপার বড় রে পাগলা!
- শাসক দরকার ওমর (রাঃ) এর মত যে কিনা ইসলামের রাফ বয় হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবাই তাকে ভয় পেত, এবং নবীজী এমনও বলেছেন যে ওমর এর পথ শয়তান ও মাড়ায় না। সেই ওমর দয়ার সাগর হয়ে গেছেন খলিফা হবার পরে। যে কেউ [মহিলাসহ] যেকোন সময় [এমনকি খুতবা দেয়ার সময়েও) উনাকে চ্যালেঞ্জ বা বিরোধিতা করতে পারতো। শাসক হিসেবে ওমর নিজের দায়বদ্ধতা মেনে নিয়ে সব শুনতেন, ভুল হলে ভরা মজলিসে তা মেনে নিতেন, সমস্যা থাকলে প্রতিকার করতেন...কাকা, ক্ষমতা পাইয়া চিন্তা কইরা দেখা খুব জরুরী এই ক্ষমতায়নের জবাবদিহি কিভাবে করবেন। ক্ষমতা কিন্তু অনেক ধরনের - এই যে আপনার এক ফোটা বেশি জ্ঞান আছে, এইটাও একটা ক্ষমতা। হিসাব রাইখেন দাদা হিসাব দেবার জন্য...
Subscribe to:
Posts (Atom)
:: প্লেজারিজম এবং ফিডম ফাইটারস এর এস নিয়ে টানাটানি ::
মানুষজন প্লেজারিজম নিয়ে কথা বলছে ফেসবুকে। ভালো লাগছে যে এতে যদি কারো কারো সেলফ - এস্টীম জন্মায়। চাকরির শুরুতে সব কাজ করার পরে যখন দেখতাম আর...
-
ঘটনা - ০১ বিশেষ কারনে হরতালের মধ্যে - ই আজ বেরোতে হলো রাস্তায় । জীবনযাত্রা নরমাল আছে বলে - ই মনে হলো । অনেক মান...
-
২২ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে আরবি বছরের শেষ মাস, দুল হিজ্জাহ। চাঁদ দেখার বৈষম্য অনুযায়ী এই মাস একেক দেশে হয়তো একেক দিন শুরু হচ্ছে। এই শুরুটা গুর...
-
বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্র / ছাত্রীদের বিভিন্ন মন্তব্য দেখছি শিক্ষকদের সম্পর্কে । ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ...