একটা পোষ্ট দিলাম, লোকজন কনফিউজড হয়ে আমাকেই
কনফিউজড করে দিছে। তাই ভাবলাম এবার একটা কনফিউজিং পোষ্টই দেই। প্রসঙ্গ সমসাময়িকঃ অধ্যাপক
জাফর ইকবাল। কয়েক পর্বে লিখবো। আমার ফিলিংস, আমার বোঝাপড়া। ভুল থাকতে পারে, গঠনমূলক
আলোচনা স্বাগতম। এটিটিউড থাকলে দুরে থাকুন। আর মুরীদ হলে এই পাড়া মারাবেন না প্লীজ।
প্রথম পর্বঃ ফেসবুক কানেকশনশ
আমার ফেসবুকের কানেকশন এর সংখ্যা অল্প অল্প
করে অনেকদুর চলে এসেছে। নিজের দেখেই বিরক্ত লাগে। তাই গত এক মাসে নতুন কারো ‘বন্ধু!’
হচ্ছিনা নিতান্ত পরিচিত না হলে। ভাবছি যারা অলরেডি ‘বন্ধু!’ তাদের আগে চিনে নেই। এই
উদ্দেশ্য নিয়েই দেখলাম অধ্যাপক ইকবাল নিয়ে আমার ‘বন্ধুদের!’ কি ধরনের প্রতিক্রিয়া।
প্রতিক্রিয়ার উপড় ভিত্তি করে আমার ‘বন্ধুদের’ এই কয়ভাগে ভাগ করা যায়।
জাফর বিরোধীঃ বাপরে, এরা সিক মানে অসুস্থ্য। এরা ফেসবুকের
এখানে সেখানে গিয়ে নোংরামি করে। এদের কর্মকান্ড দেখে মনে হয় এদের অনেকেই অর্ধ বা অশিক্ষিত।
শিক্ষিত লোকের সংখ্যাও কম না। তবে চেনা দায় মুখোশের কারনে। এদের কমেন্ট দেখলে মনে হবেনা
বাংলাদেশে আছি। অথবা এই বাংলাদেশকে চিনিনা। এরা অসম্ভব টাইপের বর্বরতা দেখায়। এরা এদের
ধর্মের সামান্য জ্ঞান বা অজ্ঞানতা নিয়ে একেকজনকে এখানে সেখানে নাস্তিক ঘোষনা করে। ব্যাপারটা
উনারা উনাদের পেশার পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। সবচেয়ে ভয়ংকর হলো উনারা নাস্তিকতার জন্য মানুষের
শাস্তি নির্ধারন করে। ধর্ম উনাদের সবচেয়ে প্রিয় হাতিয়ার যদিও এটা সম্পর্কে এদের আদৌ
বাস্তবসম্মত জ্ঞান নাই। যেই ধর্মের প্রতিষ্টাতা নিজের পরিবারের লোকজনদের আজীবন অনুরোধ
করে গেছেন ধর্ম মানার জন্য কিন্তু মানাতে পারেনি এবং মানাতে না পেরে কোনো ক্ষতিও করেন
নি, সেই প্রতিষ্টাতার তথাকথিত অনুসারিরা তার নাম নিয়ে অন্যের মাথায় আঘাত করে।
জাফর ফ্যান না কিন্তু প্রগতিশীলঃ একটা স্ট্যাটাস
দিয়েছেন উনারা। ‘একটা প্রতিক্রিয়া না জানালে কেমন দেখায়, তাই প্রতিবাদ করে গেলাম’ ধরনের।
এতো বেশি আগ্রহ যদিও নাই।
মিডিয়া পাগলঃ কিছুই জানেনা কিন্তু বিশাল একটা
হৈ চৈ ফেলে দেয় এই ব্যাপার নিয়ে। ঘটনা বা ঘটনার মূল কিন্তু কিছুই বুঝেনা বান্দা। ফেসবুকেই
পারলে এরে মারে তো ওরে ধরে। ইনারা একটার পর একটা স্ট্যাটাস দিয়ে যান নিজস্ব জ্বালাময়ীতা
নিয়ে। স্ট্যাটাস দেয়ার পরে হয়তো নাক ডেকে ঘুমান। ঘুম থেকে উঠে কোন নেতা কি লিখেছন এই
বিষয়ে সেটা শেয়ার করেন।
চুপচাপ ১: এরা কিছুই করছেনা।
পছন্দ করছেনা যে একটা মানুষের উপড় এমন হোক, কিন্তু এই লোকটা বেশি বাইড়া গেছে বা আমার
দলের বিরুদ্ধে বলে। সুতরাং নো কমেন্টস।
চুপচাপ ২: এরা মজায় আছে।
বেশ খুশি যে এই ঘটনা ঘটেছে, মুখোশ খুলে যাবে বলে কিছু বলেনা। কিন্তু ঘটনার মজা নিচ্ছে
পুরোদমে। মাঝে মাঝে জাফর বিরোধী কমেন্টে লাইক দিয়ে আসে, তাও খুব সন্তর্পনে। ভাবে যে
কেউ মনে হয় দেখেনা!
সমস্যার মূল দেখাঃ এরা জাফর বা অন্য কোনো
ব্যাপার দেখেনা। এরা দেখে যে এই ঘটনাটা দেশের জন্য ভালো না, এটার মূল খুজে ব্যবস্থা
নেয়া দরকার। ইনারা যথাসম্ভব বাংলায় ই লিখেন এই বিষয়ে, পাছে দেশের বদনাম হয়। এদের মধ্যে
দল না ব্যক্তি কানা লোকজন কম বা থাকলেও ইনারা তার প্রভাবমুক্ত।
মুরীদে জাফরঃ ঐ যে প্রথম ক্যাটেগরি আছে না,
এরা তাদের মতোই সিক। এরা অবশ্য শিক্ষিত সিক। এদের আচরন ভয়াবহ রকমের পেইনফুল কারন এরা
একাধারে মুরীদে জাফর, মুক্তমনা, প্রগতিশীল ইত্যাদি ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এরা
অধ্যাপক মহাশয়কে একেবারে একক দেবতা বানিয়ে ফেলেছে। এদের সাথে বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের
এই বিষয়ের উপড় কাজকর্মের অনেক মিল আছে [আমি এটা নিয়ে বলছি পরে]।
এদের কাছে অধ্যাপক মহাশয় মাটিতে না বরং আকাশের
অনেক উচুতে অবস্থান করেন, উনি সাধারন নাগরিকের মতো নন, উনি ই পুরো বাংলাদেশ। উনাকে
কিছু বল্লেই ফাসি দিয়ে দিবে এমন একটা ভাব। অধ্যাপক ইকবাল সকল ধরনের সমালোচনার উপড়ে।
উনারা তথাকথিত গনতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল। উনারা বলে থাকেন যে উনারা মুক্তমনের চর্চা
করেন এবং অন্যের মতকে সম্মান করেন। কিন্তু বাস্তব হলো, উনারা অন্যের মতকে সম্মান তো
দুরের কথা, যখন অধ্যাপক জাফর ইকবাল প্রসঙ্গ আসে, তখন অন্যকে কোনো মতই প্রকাশ করতে দিতে
চান না। তখন ব্যাপারটা এমন দাড়ায় যে এইদেশে অধ্যাপক ইকবাল এবং উনার সমর্থকরা ই শেষ
কথা। অন্য কারো কোনো অধিকার নাই। ইনাদের মন এতো মুক্ত যে ইনারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে যাতা
বলে ফেলেন। কিন্তু ভুলে যান যে এটা ইসলাম না এবং এই ধর্মের বিলিয়ন অনুসারি আছেন যারা
অন্যকে আঘাত করেন না। কিছু কিছু মুক্তমনাদের কাজ দেখে মনে হয়, ইসলাম কে গালি দেয়া হচ্ছে
মুক্তমন থাকার একমাত্র বৈশিষ্ট। উনাদের এহেন কর্মকান্ড দেখে প্রশ্ন আসে জাফর ইকবাল
আসলে কে?
No comments:
Post a Comment