Sunday, May 28, 2017

৪২ জন গ্রেপ্তার, ২ জন মৃত, এবং আহত বেশ কয়েকজন - Jahangirnagar University

৪২ জন গ্রেপ্তার, ২ জন মৃত, এবং আহত বেশ কয়েকজন
জাবি প্রশাসনের সমাধান – হল ভ্যাকেন্ট
শিক্ষক সমিতির বিবৃতি – একবার ও ছাত্র মৃত্যুর উল্লেখ নাই
আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি দুটারই এবং লজ্জা পাচ্ছি জাবিয়ান হিসেবে
---------------------------------------------------
  • একজন শিক্ষক যখন উপাচার্য হয়ে যান উনি তখন আর শিক্ষক থাকেন না। উনি কর্মকর্তা হয়ে যান। তবে যেহেতু শিক্ষকই কর্মকর্তা হোন, আমরা সবসময় শিক্ষকসুলভ চিন্তাভাবনাই পেয়ে থাকি উপাচার্যদের কাছ থেকে। শিক্ষকসুলভ আচরন মানেই হলো ছাত্রবান্ধব আচরন। কিন্তু হল ভ্যাকেন্ট ছাত্রবান্ধব আচরন না।
  • উপাচার্য মহোদয় জাবিকে own করেন কিনা সেটা এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলবোনা এখানে। তবে উনার আশেপাশে থেকে যারা সিদ্ধান্ত নেন উনারা জাবিকে কতটা চিনেন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। Ownership না থাকলেই কেবল এই রকম কাজগুলো হওয়া সম্ভব। 
  • আমি এইরকম বলছি এই জন্য যে উনি কিন্তু একধরনের বিশ্রী আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই আজকের এর নরম গদিতে এসেছেন। উনার মত কারো আসার পথ করে দিতে আমরা মধ্য রাতেও অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের বাসা অবরুদ্ধ করে রেখেছিলাম। আমরা শিক্ষকরাই। অধ্যাপক হোসেন এসে ঠায় দাড়িয়েছিলেন সস্ত্রীক। আর উনি ছাত্রদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়েই রোজার প্রথম দিনে ভুলে গেলেন সবকিছু। আমি আসলেই লজ্জিত বোধ করছি উনার আচরনে। এই রোজার দিনে এতো অল্প সময়ের মধ্যে এতোগুলো ছেলেমেয়ে কোথায় যাবেন? কি করে যাবেন?
  • উনি সেই ভিসি যিনি সেইসব ছাত্রদের চাকরি দিয়েছেন যারা একদিন শিক্ষকদের মেরেছিলো। শিক্ষকরা সেদিন আন্দোলন করেছিলেন যার ফল উনি ভিসি হয়ে ভোগ করছেন। আমরা মাত্র ৩/৪ জন শিক্ষক সেদিন ছাত্রলীগের ছেলেদের থামাচ্ছিলাম। অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার এর হাত কেটে রক্তও পরেছিলো সেদিন। আমি খুব লজ্জা পেয়েছি যেদিন উনি ঐ ছাত্রগুলোকে চাকরি দেয়ার জন্য গো ধরে বসেছিলেন। উনি আওয়ামী ভিসি। আওয়ামী লোকজনই নিয়োগ দিবেন – বাংলাদেশে আমি এর বাইরে কিছু আশা করিনা। কিন্তু আওয়ামীলীগে কি ভালো লোকজন নাই?
  • ইনি এবং ইনার বিভাগ জাবিতে আন্দোলনের জন্য বিখ্যাত। আমি ভর্তি হবার সময় ৮ মাস খেয়ে ফেলেছিলো উনাদের ভর্তি ফি বিরোধী আন্দোলন। সেদিন ও হল ভ্যাকেন্ট করা হয়েছিলো। সেই উনি ই যদি ভিসি হয়ে আন্দোলন নিয়ে এইরকম করেন, তাহলে কি ধরে নিবো উনি বা উনারা ভেবে নিয়েছেন আন্দোলন শুধু উনারাই করবেন বা উনাদের স্বার্থেই কেবল তা করা যাবে? 
  • একটা ছেলের ধবধবে সাদা পিঠে রক্ত, আরেকটা ছেলে হাতকড়া নিয়ে হাসপাতালের বিছানায়। যতবার ছবিগুলো দেখেছি ততবারই ভয়ংকর লেগেছে। উনার নিজেরও কিন্তু ছেলে আছে, উনি কি অন্য মায়ের পেইনটা বুঝতে পারেন না? এই ছেলেদের মা যদি এইসব ছবি দেখেন তাদের কি অবস্থা হবে? আর কোন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে যে হাসপাতালের বিছানায় ও হাতকড়া লাগিয়ে রাখতে হবে? এগুলো কি উনার বিবেক কে নাড়া দেয়?
  • একজন উপাচার্য একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজার বা CEO. উনার কাজই হলো ম্যানেজ করা। কি ম্যানেজ করলেন দেখলাম। এই ধরনের ম্যানেজমেন্ট একটা বিভাগ চালাতেও সাহায্য করবে না বোধ করি।
শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা হয়তো ভুলে গেছেন যে ছাত্র নামক প্রানীগুলো আছে বলেই উনারা শিক্ষক। যেই দুজনের স্বাক্ষরে বিবৃতি দেখলাম, উনারা অনেকদিন যাবত এই পেশায় আছেন। স্যারেরা, এতোদিনের অর্জিত শিক্ষকতার সুনাম কোন কারনে এইরকম প্রশ্নবিদ্ধ করছেন? একবার নিজের বিবেক কে জিজ্ঞেস করে নিবেন প্লীজ।

ছাত্ররা – যোগ্যতা নিয়ে আপনাদেরকেও ভাবতে হবে। আপনারা তো এখনো হল ভ্যাকেন্ট ই ঠিকমত লিখতে পারছেন না। যেই হারে ভিসি বা অন্যান্য শিক্ষকদের গালিগালাজ করছেন, নিজের বাপ মা বা ভাইবোনদের ক্ষেত্রে কি একই ভাষা প্রয়োগ করতে পারবেন? কি শিখলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে? আপনারা কি ম্যানেজ করতে পেরেছেন একটা সুস্থ আন্দোলন? এখানে কি আপনাদের অসফলতা নাই?

শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আপনাদের অত্যন্ত ক্ষোভ। ধুমাইয়া গালিগালাজ করছেন। কিন্তু শিক্ষকরা কি মানুষ নন? উনাদের কি পরিবার পরিজন নাই? শিক্ষকদের ছেলেমেয়েরা কি ফেসবুকে আসেন না? উনারা কি আপনাদের এইসব গালি দেখেন না? সব শিক্ষক যদি আপনাদের বিরুদ্ধে থাকতো তাহলে তো আপনারা এতোদিন বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকতে পারতেন না বা থাকতে চাইতেন না। কিন্তু আমি তো দেখছি এই জাবি থেকে ই অক্সফোর্ড এ ছেলেমেয়েরা পড়তে যাচ্ছেন। একবার নিজেকে ইন্টার পাসের পরের সেই আনকোরা ছেলেটি বা মেয়েটি হিসেবে ভেবে দেখবেন প্লীজ। হাটি হাটি পা পা করে আজ অনেক বড় হয়ে গেছেন। ভালো কথা, এটা নিয়ে আপনার শিক্ষকদেরও কিন্তু গর্বের শেষ নাই। অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মত বিখ্যাত গবেষক তার ছাত্রদের কৃতিত্ব নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। উনাকে আপনি লাখ লাখ টাকা দিয়েও এই কাজ করাতে পারবেন না। কিন্তু উনি উনার ছাত্রের বড় হবার খুশিতে এমনিই এইসব করছেন। সবই ঠিক আছে, শুধু আপনারা ভুলে গেছেন যে আপনার এই বড় হবার পিছনে আজকে যাদের গালি দিচ্ছেন তাদেরও  অনেক ভুমিকা আছে।

আমি বুজতে পারছিনা আপনাদের তীরের টার্গেট কেনো শিক্ষকরা হয়ে গেলো? আপনারা যেই হারে গালাগালি করছেন ঐসব পড়ার পরে কোনো শিক্ষক কেন  আপনার বাপ মা ও আপনার পক্ষে কথা বলতে লজ্জা পাবে। এই শিক্ষকরা কি এর পরে আপনাদের মাথা তুলে দাঁড়ানো পড়াতে পারবেন? আপনারা উনাদের মাথা নিচু করে দিলেন। উনারা এর পরে আপনাকে পড়ানোর সময় আপনি যেই গালিগুলো দিচ্ছেন তা কি মনে পড়বেনা? শিক্ষকদের জায়গায় আপনি হলে কি করতেন? কোনোদিন ভেবে দেখেছেন? একটা সহজ উদাহরন দেই। আজকে যেই গরম রক্ত নিয়ে ডেইরীতে যেতে পেরেছেন, ক্যাম্পাস ছাড়ার পরেরদিন তা পারবেন কি? পারবেন না। সেদিন রক্ত হীম হয়ে যাবে। এবং ঐদিন যারা আজকের আপনি যা করছেন তা করবে তাদের প্রতি আপনি অত্যন্ত বিরক্ত হবেন। আপনি বলবেন যে এদের কি সিভিক সেন্স নাই? সেদিন আপনি অনেক দায়িত্ববান সামাজিক হয়ে যাবেন। অথচ আপনাকে সামাজিক হতে শিখানো হচ্ছে এখন। আজ আপনি দায়িত্ববান সামাজিক হলে অনেক দায় শোধ করা সম্ভব হতো। আপনার সহপাঠী মারা গেছেন, অত্যন্ত দুঃখজনক, প্রশাসন যেটা করেছেন সেটাও দুঃখজনক। কিন্তু সমাধান কি এইভাবে? একবার চিন্তা করে দেখবেন প্লীজ।

:: প্লেজারিজম এবং ফিডম ফাইটারস এর এস নিয়ে টানাটানি ::

 মানুষজন প্লেজারিজম নিয়ে কথা বলছে ফেসবুকে। ভালো লাগছে যে এতে যদি কারো কারো সেলফ - এস্টীম জন্মায়। চাকরির শুরুতে সব কাজ করার পরে যখন দেখতাম আর...