আমাদের conceptualization এ সবসময়ই কিছু সমস্যা থেকে যায়। এই যেমন আজকের দিনটি নিয়ে। একটা সময় এটা ছিল শুধু আমাদের, এখন এটা বিশ্বের। দিবসটি বিশ্বের হওয়াতে এর ধরনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আমাদের কাছে এই দিনটার দুটো আবেদন আছেঃ শহীদের সম্মান জানানো এবং নিজের ভাষাকে রক্ষা করা। তাই আমরা যেমন শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করি ফুল দিয়ে তেমনি ভাষার চর্চাও করি। কিন্তু সারা পৃথিবী তা করেনা; তারা ২য় অংশটাই বেশি পালন করে। এটা গুরুত্বপূর্ন কারন পৃথিবীর অনেক ভাষাই হারিয়ে যাবার হুমকির মুখে আছে।
তো আমরা আসলে কি করি?
তো আমরা আসলে কি করি?
- ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। অনেক জ্ঞানপাপীরাই বলছেন যে শ্রদ্ধা জানানোটা ফেইক, চেতনার ব্যবসা ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা না করে দোয়া করা যেতো, শহীদদের পরিবারের খবর নেয়া যেতো। খুবই উত্তম প্রস্তাব। কিন্তু পরেরগুলো করতে গেলে প্রথমটা করা যাবেনা কেন এইটা আমার মাথায় ধরেনা। উনারা আসলে এইটাকে ফুল পুজো হিসেবে দেখেন ! ফুল পুজোতে দুটা সমস্যাঃ এক- ভারতকে অনুসরন করা হয়, দুই-ইসলামের বিরুদ্ধে যাওয়া হচ্ছে। উনাদের ইসলামের প্রতি যত ভালবাসা ঠিক ততটাই ঘৃনা ভারতের প্রতি। অন্যকে ভালবাসতে না পারলে ঘৃনা করতে হবে এইটা মনে হয় ইসলামও বলেনা। এই জ্ঞানীদের জ্ঞান দেখলে আমার মাঝে মাঝে বমি আসে। এই জ্ঞানীরা পুজো আর সম্মানকে এক জায়গায় এনে দাড় করিয়ে দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে আবার অনেক বড় বড় উন্নত দেশে বসে এইসব জ্ঞান বিতরন করেন। উনারা ওখানে কিন্তু মাঝে মাঝেই ফুল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যান শ্রদ্ধা জানাতে। তখন সেটা পুজো হয়না। উনারা আসলে আমাদের রাজনীতিবিদদের মতঃ নিজেরা খাবেন, অন্যকে খাইতে দিবেননা। এদের কাজ কর্মের সাথে শাম্মী হকদের জার্মানি থেকে বাংলাদেশে প্রকাশ্য চুমু খাওয়ার আহবানের অনেক মিল আছে। শাম্মী হকরা যেমন ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের জার্মানি থাকা নিশ্চিত করে, তেমনি এরাও মানুষদের ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে নিজেদের ব্যবসা চালু রাখে। আমার কাছে এইসব লোকগুলোই প্রকৃত চেতনা ব্যবসায়ী
- দোয়া করতে তো কেউ মানা করেনি। অনেক জায়গায় হয়তো দোয়া করাও হয়। আচ্ছা ধরে নিলাম করা হয়না। তাহলে চলুন দোয়া করার জন্য মানুষদের আহবান জানাই। কিন্তু বিভেদ সৃষ্টি করছেন কেন? কাদা ছোড়াছোড়ি করছেন কেন? শহীদদের পরিবারের খবর না নেয়াটা আমাদের জন্য পাপের সমান। চলুন এটা নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করি। কিন্তু সম্মান করাটা বন্ধ করার দরকার কোথায়?
আমরা বাড়াবাড়ি করি কোথায়?
- সারাদিন মাইকে গান এবং বক্তব্য বাজাই। ঢাকা শহরে যেখানে মানুষজন বাসায় থাকতে পারেনা গাড়ির হর্নের কারনে, সেখানে এই যে মাইকগুলো বাজানো হচ্ছে, এইটা দিয়ে কোন ধরনের চেতনা জাগানো হয় তা আমার মাথায় ধরেনা। আমি যতটা বুঝি এটা দিয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হয় এবং জনগন কোন কিছু বিশ্লেষন না করে পুরো ভাষা দিবসটাকেই একটা বিরক্তিকর ব্যাপার ধরে নেয়
- অন্য ভাষাকে গালাগালি করি। ব্যাপারটা যখন আন্তর্জাতিক হয়ে গেছে তখন আর অন্য ভাষাকে নিয়ে বাজে কিছু বলার সুযোগ নাই। বরং আমাদেরকেই এখন বলতে হবে অন্য ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। তাই অন্য ভাষা নিয়ে বাজে মন্তব্য আমাদের দৈন্যতাকেই প্রকাশ করবে এবং সেটাই হবে চেতনার অবনমন